যমুনা, আমার হাত ধরো, স্বর্গে যাবো। এসো, মুখে রাখো মুখ, চোখে চোখ, শরীরে শরীর নবীনা পাতার মতো শুদ্ধরূপ, এসো স্বর্গ খুব দুরে নয়, উত্তর সমুদ্র থেকে যে রকম বসন্ত প্রবাসে উড়ে আসে কলস্বর, বাহু থেকে শীতের উত্তাপ যে রকম অপর বুকের কাছে ঋণী হয়; যমুনা, আমার হাত ধরো, স্বর্গে যাবো। আমার প্রবাস আজ শেষ হলো, […]
প্রবাসের শেষে
নীরার হাসি ও অশ্রু
নীরার হাসি ও অশ্রু নীরার চোখের জল অনেক চোখের অনেক নীচে টল্মল্ নীরার মুখের হাসি মুখের আড়াল থেকে বুক, বাহু, আঙুলে ছড়ায় শাড়ির আঁচলে হাসি, ভিজে চুলে, হেলানো সন্ধ্যায় নীরা আমাকে বাড়িয়ে দেয়, হাস্যময় হাত আমার হাতের মধ্যে চৌরাস্তায় খেলা করে নীরার কৌতুক তার ছদ্মবেশ থেকে ভেসে আসে সামুদ্রিক ঘ্রাণ সে আমার দিকে চায়, নীরার […]
নীরার পাশে তিনটি ছায়া
নীরা এবং নীরার পাশে তিনটি ছায়া আমি ধনুকে তীর জুড়েছি, ছায়া তবুও এত বেহায়া পাশ ছাড়ে না এবার ছিলা সমুদ্যত, হানবো তীর ঝড়ের মতো– নীরা দু’হাত তুলে বললো, ‘মা নিষাদ! ওরা আমার বিষম চেনা!’ ঘূর্ণি ধুলোর সঙ্গে ওড়ে আমার বুক চাপা বিষাদ– লঘু প্রকোপে হাসলো নীরা, সঙ্গে ছায়া-অভিমানীরা ফেরানো তীর দৃষ্টি ছুঁয়ে মিলিয়ে গেল নীরা […]
নিরাভরণ
পায়ে তোমার কাঁটা ফুটেছে, উচ্চাকাঙ্ক্ষা? তুমি তাহলে পিছনে থাকো বন্ধু ছিলে উদাসীনতা, তোমারও সাধ গৃহী হতে? ডাইনে যাও পোশাক, তুমি ছিন্ন হবে? শান্ত, তোমার তৃষ্ণা পাবে? জিরোও এই গাছের নিচে হলুদ বই, শাদা, বোতাম, কৃতজ্ঞতা, চাবির দু:খ, বিদায় দাও আমার আর সময় নেই, আমি এখন পেরিয়ে মজা দিঘির কোণ প্রণাম করে অরণ্যের সিংহাসনর, সামনে ঘুরে […]
ধান
হলুদ শাড়ি আর পরো না, এবার মাঠে হলুদ ধান ফলেনি ঘরে তোমার হল্দে পর্দা! মিনতি করি খুলে রাখো এবার মাঠে হলুদ ধান ফলেনি। এপাড়া জুড়ে সানাই বাজে, ওপাড়া জুড়ে শামিয়ানা ব্যস্ত মানুষ, সুখী মানুষ, শঙ্খ আর উদ্ধ্বনি লাল চেলি সবই থাকুক, বন্ধ রাখো গায়ে-হলুদ এবার মাঠে হলুদ ধান ফলেনি আয় কাক আয় কাকের পাল আয়রে […]
দ্বারভাঙা জেলার রমণী
হাওড়া ব্রীজের রেলিং ধরে একটু ঝুঁকে দাঁড়িয়েছিল দ্বারভাঙা জেলা থেকে আসা টাট্কা রমনী ব্রীজের অনেক নিচে জল, সেখানে কোনো ছায়া পড়ে না কিন্তু বিশাল এক ভগবতী কুয়াশা কলকাতার উপদ্রুত অঞ্চল থেকে গড়িয়ে এসে সভ্যতার ভূমধ্য অরিন্দে এসে দাঁড়ালো সমস্ত আকাশ থেকে খসে পড়লো ইতিহাসের পাপমোচানবারী বিষণ্ণতা ক্রমে সব দৃশ্য, পথ ও মানুষ মুছে যায়, কেন্দ্রবিন্দুতে […]
দুটি অভিশাপ
সমুদ্রের জলে আমি থুতু ফেলেছিলাম কেউ দেখেনি, কেউ টের পায়নি প্রবল ঢেউ-এর মাথায় ফেনার মধ্যে মিশে গিয়েছিল আমার থুতু তবু আমার লজ্জা হয়, এতদিন পর আমি শুনতে পাই সমুদ্রের অভিশাপ। মেল ট্রেনের গায়ে আমি খড়ি দিয়ে এঁকেছিলাম নারীর মুখ কেউ দেখেনি, কেউ টের পায়নি এমনকি, সেই নারীরও চোখের তারা আঁকা ছিল না এক স্টেশন পার […]
ডাকবাংলোতে
ফুটে উঠলো একটি দুটি টগর কন্ঠে মুক্তো- মালা মরি মরি তোমরা আজ সকালবেলার প্রসণ্নতা এক মুহূর্তে শিশির ভেজা আলো নর্মছলে তোমরা অন্সীরী। ‘কী সুন্দর ঐ টগর ফুল দুটো- খোঁপায় গুঁজবো আমি!’ প্রাক-যুবতী বারান্দার প্রান্তে এসে আঁখি তুললো- সদ্য ভোর, বিরল হওয়া, ঠান্ডা রোদ সাংকেতিক পাখির ডাক, উপত্যকায় নির্জনতা আমি বেতের ইজিচেয়ারে অলস। ফুলের থেকে চোখ […]
জয়ী নই, পরাজিত নই
পাহাড়-চুড়ায় দাঁড়িয়ে মনে হয়েছিল আমি এই পৃথিবীকে পদতলে রেখেছি এই আক্ষরিক সত্যের কছে যুক্তি মূর্ছা যায়। শিহরিত নির্জনতার মধ্যে বুক টন্টন করে ওঠে হাল্কা মেঘের উপচ্ছায়ায় একটি ম্লান দিন সবুজকে ধূসর হতে ডাকে আ-দিগন্ত প্রান্তের ও টুকরো ছড়ানো টিরার উপর দিয়ে ভেসে যায় অনৈতিহাসিক হাওয়া অরণ্য আনে না কোনো কস্তুরীর ঘ্রাণ কিছু নিচে ছুটন্ত মহিলার […]
জীবন ও জীবনের মর্ম
জীবন ও জীবনের মর্ম মুখোমুখি দাঁড়ালে আমি ভুল বুঝতে পারি আমার ক্ষামা চাইতে ইচ্ছে হয়। বুদ্ধের বুকের হাঁস হানা ঝাপটায়, আমি মাংসলোভী বিশাল বৃক্ষের ছায়া জলে ভাসে-আমি তমস্বান হয়ে ছুটে গেছি আমি ভুল বুঝতে পারি- বিস্মৃতিকে কতবার মনে ভেবেছি বিষন্নতা ট্রেন লাইনের পশে এসে থমকে দাঁড়িয়েছে বনবাসী হরিণ কয়লা খনির ভিতরের অপরাহ্নের মতন উদসীনতা আমাকে […]