ইলিশ মাছের গন্ধ ছাড়ে ময়রাপাড়ায় মিষ্টি।
চমচমিয়ে পড়তে থাকে ইলশেগুঁড়ি বিষ্টি।
দোকান যদি বন্ধ তবু কান থাকে তো খোলা।
চাঁদের বুড়ি পূর্ণিমাতে ঢালে আতপ-গোলা।
সেগুন গাছ উচ্চ এবং বেগুন গাছটি খর্ব।
নামের মিলে করছে দাবি উচ্চ শিরের গর্ব।
গোলমালটি বেশ জমেছে, চৌকো হয়ে বসি।
গানের গলা দিচ্ছি ছেড়ে, অংকটাকে কষি।
কথা ছড়ায় ক্রমে-
এক কান কি দু’কান করে কথা ছড়ায় ক্রমে-
বাংলাদেশের বায়োস্কোপে খেল্ উঠেছে জমে।
মেয়েদের তো চুল লম্বা, ছেলেদেরটা খাটো।
মাথার চুল যেমন-তেমন, সাবধানে পথ হাঁটো।
মেয়েদের তো গলায় মালা, ছেলেদেরটা খালি।
জয়ের মালা আসল মালা- তবেই করতালি।
ব্যস্তবাগীশ ব্যস্ত বড়, বাক্যে বাগেশ্বর।
কোথায় গেল ব্রহ্মপুত্র? ধুধু বালির চর!
ইষ্টিকুটুম ছাড়াই এখন ইস্টিশানে গাড়ি।
চুনে আঁকা চোখ মেলে ঐ কাকতাড়–য়া হাঁড়ি।
কথার দ্রুত তালে-
বায়োস্কোপের লাটিম ঘোরে কথার দ্রুত তালে।
তাল নয়কো গাছের তাল- ভাষার তালে তালে।
কদম ফুলকে সাধু ভাষায় বলা হয় কদম্ব।
জোর কদমে ছুটতে ছুটতে হারান হতভম্ব।
হারান মানে হারিয়ে যাওয়া- এ হারান সে হারান নয়।
এ হারানকে দেখেছিলাম রাষ্ট্রভাষার বাহান্নয়।
এ হারানকে পেয়েছিলাম একাত্তরের যোদ্ধা।
এ হারানও হারিয়ে গেছে- এই কথাটি মোদ্দা।
নদীর বুকে ভাসান রে ভাই, পাষাণ ভাঙার শব্দ।
পানির ধারে পানকৌড়ি, চরের বালি তপ্ত।
ছবি দেখছে চোখ-
বায়োস্কোপের ফুটোয় ছবি, ছবি দেখছে চোখ।
দেখতে দেখতে আলোর মধ্যে ফুটে উঠছে লোক।
ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ একাত্তরের ছাব্বিশে।
সেদিন দেখি স্বাস্থ্য ভাল, আজকে দেখি হাড্ডি সে।
ইতিহাসের পিঠে চাবুক, রক্তে মানুষ ভেসে যায়।
কথার টানে একশ’ কথা আলোচনায় এসে যায়।
হারান কেন পথ হারাল? গলায় জয়ের মালা কৈ?
নেপোর ঘরে উঠছে কেন তোমার গরু তোমার দৈ?
পাঠশালাতে পড়–য়ারা, পণ্ডিতেরা পুলিশে।
মোহর ছিল মুঠোর মধ্যে, খুলেই দেখি ধূলি সে!
আয়নাতে কার ছায়া?-
বায়োস্কোপের পাগলা ছবি, আয়নাতে কার ছায়া?
হারান বলে, আমিই কিনা ভাবতে হচ্ছে ভায়া॥