ফুলের গন্ধের মতো থেকে যাবো তোমার রুমালে
ধূপের গন্ধের মতো তোমাদের শান্ত সন্ধ্যাকালে
সমস্ত দিনের শেষে থেকে যাবো নদী পারাপার
তখনো যাত্রীর দেখা পাওয়া যাবে এই নদী পার।
ভোরের প্রথম আলো হয়ে চুমো খাবো ওই গালে
ছায়া লয়ে সরে যাবো বেলাটি পোহালে।
কিন্তু তার আগে আমি আরো কিছুকাল
থেকে যাবো কবিতার পঙ্ক্তি হাতে অপার কাঙাল
১২.৬.২০১৬
রয়াল মার্সেডন হাসপাতাল, লন্ডন
স্তম্ভন সামান্য নয়
স্তম্ভন সামান্য নয় কর্কট সাক্ষাতে
বুকের ভেতরে
স্তম্ভিত স্মৃতির সৌধ
তুলবার কাজ শুরু করে দিয়েছে
মিস্তিরি_
মাথায় জীবনবাদী সবুজ রুমাল বেঁধে
কাজে নেমে গিয়েছে কখন।
আমি চুপচাপ দেখে যাচ্ছি
কলমের নিচ থেকে কালি
ফোঁটা ফোঁটা
এখনো অক্ষর রূপে জমাট বাঁধেনি_
স্তম্ভন একেই বলে
বীজাণুর অগ্রসর কালে
সভ্যতার প্রাচীর হঠাৎ ধসে
বসে পড়ে যায়_
এখন ক্ষুধার্ত কবি নিজ হাতে লেখা
পঙ্ক্তিমালা থেকে অক্ষরের গ্রাস
তুলে তুলে খায়_
একেই সামান্য নয় বলা যায়
সৌধ-প্রান্তে বসে
২৯.৬.২০১৬
হাসপাতালে আছি
সন্ধ্যায়
আকাশটা নিভে যেতে যেতে থমকে দাঁড়ায়,
তারপর গোপনে পকেট থেকে নীল রুমালের মতো
এক লক্ষ নক্ষত্র ফোটায়।
কতকাল থেকে বিছানায়
পূর্ণিমা তো নয়_ অমাবস্যায়
ঘড়ির ঘণ্টার মতো রোল পড়ে গূঢ় মত্ততায়,
এখনি সময় নয়, হয়নি সময়
তবুও সময় জীবতারা ফেটে ফোটে
একটি কি দুটি খসে যায়
প্রতিটি সন্ধ্যায়
প্রবাসে দৈবের বশে
যদি যমের
আকাশে আগুন লেখা হয়ে যাবো আমি
শয্যা থেকে উড়ে যাবো
নক্ষত্রের বোঁটা দাঁতে, ঈশ্বরের অমর বিতানে।
আপাতত কর্কটের ঘুণপোকা
যে শব্দের সহিত কাটে
তাকে পাই ইমন কল্যাণে।
পড়ে আছি, তবু পড়ে নাই!
আমার এ বিছানায়
অমরত্ব চির অস্পষ্টই
নাচায় ফেরায়_
আহ্বান করে গান করে; নক্ষত্র ফোটায়
১০.৬.২০১৬
রাত ১টা, লন্ডন
কড়া নাড়লেই
কড়া নাড়লেই কপাট খুলবে!
সে রকম কথা তো ছিলো না।
জীবনের দোলক দুলবে
থেমেও যে যাবে একদিন
কেননা এতটা দম চাবিতে ছিলো না,
থেমে যাবে মুহূর্তের কাঁটা,
তবুও আবার পথে রাত্রিদিন হাঁটা
এছাড়া এমন কোনো প্রতিশ্রুতি কাউকেই দেওয়া তো ছিলো।
খোলে না কপাট,
কেননা কড়ার শব্দ ওঠে নাই, হয় নাই,
ধূলি মাখা পড়ে থাকে মুকুট ও সম্রাট
১৯.৬.২০১৬, লন্ডন
হ্যারো বিপণি-বিতানে
ভাঙা দেয়ালের খাঁজে
রোদ আছড়ে পড়ে
আলো আর ছায়া হয়ে আছে।
নদীও নদীর কাছে মানুষকে ডাকে
ওপারে যাবার জন্যে। কিন্তু যেই
মানুষ দাঁড়ালো এসে
পলের ছায়ার রূপে ছবি যায় ভেসে,
আমিও জন্মান্তরে!
একটি শিশুর রূপে আমাকেই দেখি
জীবনের ভুবনের দেয়ালের কাছে
চূর্ণিত হবার জন্যে পড়ে আছি
কর্কটের রোগে!
ফুলে ঢেকে দেবো পৃথিবীকে
এইবার যদি বেঁচে যাই
বাঁচি
১৭.৬.২০১৬