তুমুল তর্কের মাঠে স্তব্ধ ওই দাঁড়কাকটিকে ভালো করে নজরে আনুন। দেখুন, কতটা তার একাগ্র চঞ্চুটি! খুঁটে খুঁটে শব্দরাশি খেয়ে চলেছে সে বক্তাদের অগোচরে তর্কের উৎপন্ন বর্জ্য- সব- সব- সব- সবটুকু তুলে নিয়ে উড়ে যাবে সেও অগোচরে পৃথিবীর সন্তাপ যেখানে শেষাবধি শ্রান্তি পায়- ঘাসের ডগায় যেখানে শিশির পড়ে হীরকের মতো- সারা দিন উজ্জ্বল প্রদর্শ হয়ে থাকে- […]
ঘাসে ওই একটি শিশিরবিন্দু
প্রেম চাই
এই মুহূর্তে, এক্ষুনি আমার একটু প্রেম দরকার। একটু আগেই কলমটা একগাদা নোংরা বমি করল। শুরুতেই ‘বিবর্ণ ধুসর প্রান্তর’। আমি দুহাত দিয়ে আপ্রান চেপে ধরলাম নীপটাকে। ফস্কে গেল, ছড়াত! কালি ছড়িয়ে পরল খাতার মধ্যিখানে। সেখান থেকে বেরিয়ে এলো এক নিকষ অন্ধকার, এবার সেই অন্ধকার ধীরে ধীরে হয়ে উঠল ‘রক্তস্রাব’। ঘিনঘিনে পোকাগুলো কিলবিলিয়ে সাঁতরাতে লাগল তার ওপর। […]
কল্পনার স্মৃতি
কিরে? তোর মনে পরে? মনে পরে সেই দর্জিপাড়ার অন্ধগলিটা? যেখানে প্রথমবার তোর মখমল হাত ছুঁয়ে গেল আমার হাতে। হাল্কা কেঁপে, চট্ করে একটু তফাৎ বানিয়ে নিয়েছিলি। তারপর দুজনেই চুপ। সেখান থেকে এগলি সেগলি পথ হারানো জটিল বাঁক স্যাঁতস্যাঁতে নোনালাগা দেয়াল ঘোরের মধ্যে পেরতে পেরতে হঠাৎ পৌঁছে গেলাম বড় রাস্তার মোড়ে। রাস্তার ওপারে তখন নিয়ন আলোয় […]
বাউন্ডুলে
সময়ের সাথে পাতিয়েছি ঘুম রাত্রি যখন ক্লান্ত নিঝুম শামুখ সময় গা এলিয়ে সে ঘুমায় আমি তাড়াই। কাজের সাথে পাতিয়েছি অলস দাঁড় কাকেতেও ভরায় কলস মত্ত আমি মহুয়া চড়াই সে ছোটে আমি দাঁড়াই। কাশবনে আজ পাল তুলেছি শিশির ফোঁটায় চান করেছি শরত এসে শিউলি বিছায় সে ঝরে আমি নাড়াই। উড়িয়েছি রাত ব্রহ্মাণীতে মন ডুবেছে জল বালিতে […]
দামাল মেয়ে
দুরন্ত, দামাল, দস্যি মেয়ে তার অনেক ডাক নাম। পায়ে সরষে দিয়ে চড়কি কেটে বেড়াত সারা গ্রাম। ওপাড়ার হারান কাকার বাগান থেকে রোজ আমড়া চুরি করত তারপর পুঁচকে সাগরেদদের নিয়ে বসতো দামোদরে তীরে কাঁচা লঙ্কা, নুন সহযোগে জমে উঠত চরুইভাতি। একবার তো নেপালদের বাগান থেকে গোটা কলার কাঁদ কেটে নিয়ে এসেছিল। নেপালের বাবা জানতে পেরে, সে […]
যে শরতে ইলিশের বান
ভাদ্র এলো আশ্বিন এলো অথচ শরৎ এলো না, কাশফুল ফুটলো চরে চরে, অথচ বর্ষণ গেলো না; যেহেতু দরজায় এসে গজরাতে থাকলো কামিনী দামিনী, যেহেতু ভয়ে ভয়ে এই বুকে সেঁধিয়ে গেলে তুমিও অশণি, তা-নাহলে এই নাতিউষ্ণে কে আর জলাঞ্জলি দেয় বলো অমন তুলতুলে ঠোঁট, সিগ্রেটের জ্বলজ্বলে হলাহলও যার কাছে তুচ্ছ ঠেকে চুমুকে চুমুকে; তুমি খুব রোদে […]
শরৎসন্ধ্যার সংবেদনা
শিউলি ফোটা_ ভোর বেলার মতো শরৎকালে সন্ধ্যাআকাশ এই আকাশখানিরে ভালোবেসে আমার দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসে; কত শৈশব কত শিউলি ফুলের মালা গাঁথা কত নদীর জীবনী পাঠ, আমি খুঁজতে খুঁজতে কোন বিষাদঅরণ্যে হারিয়ে যাই। সেখানে সাদা মেঘের চিত্রকলা, অক্ষরের মতো শিশির বিন্দু আমি চোখ ফেরাতে পারি না, মন ফেরাতে পারি না করজোড়ে দাঁড়িয়ে থাকি; কখন আমাকে […]
বীজ
পশ্চিম থেকে কালো মেঘ উঠে ছেয়ে দিয়েছে আকাশ। ভরদুপুরে কুলুঙ্গিতে লম্ফু জ্বলছে। সে জানে চুল আজ শুকোবে না তাও মাথা ঘসেছে গুঁড়ো সাবান দিয়ে ভেজা চুলে সুগন্ধি তেল মাখিয়েছে। মাটির দাওয়ায় বসে আছে মুন্ডুরি রাঙ্গা মোড়াম এর পথ চেয়ে। চিনিলাল- এর ভাবনায় গায়ের গন্ধ তীব্র হয়। দিগন্তে চুমু খাওয়া মাঠ পেরিয়ে শাল পিয়ালের বন পাশ […]
দেখা শোনা
কত কি বলতে চাইতে তুমি। তোমার মা, স্কুল, ছাত্রী বাসের ভিড়, রাস্তার ময়লা, মোড়ের বখাটে ছেলেটা, আরও কত কি। আমি শুনতাম না, সময় ছিল না। সংকটমোচন টুপি মাথায় গলিয়ে বাতলে দিতাম সহজ উপায়। একনিষ্ঠ শ্রোতার খোঁজে…… সেদিন বেরিয়ে গেলে তুমি। আজ আমি সব শুনি। নৈশব্দের এই গ্রামের সব শব্দ আমি স্পষ্ট শুনি। পাগল বাতাস যখন […]
দিকশূন্যপুর
এই শহর বা সেই শহর হয়তোবা নাম না জানা কোনও গ্রাম তুই আছিস সেখানে। স্বামী সন্তানের আদরে জড়ানো ঘরকন্না করছিস সুখে। এখনো হয়তো দুপুরবেলা বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে সুনীল বাবুর উপন্যাস পড়িস। হ্যাঁরে, কোনও চরিত্রের সাথে আমার মিল খুঁজে পাস? আমি পাই। আমার ভীষণ নীল হতে ইচ্ছে করে। এখন আমি কোথায় জানিস? ভাটিনার জঙ্গলে। লাল […]