নন্দ'র মা

সেই কোন দেশে আমরা যাচ্ছিলাম কোন দেশ ছেড়ে আমরা যাচ্ছিলাম পেরিয়ে পেরিয়ে উঁচু-নীচু ঢালু মাঠ শিশির ভেজানো কাঁটাতার, গাছপালা আলপথে নেমে আমরা যাচ্ছিলাম ধানখেত ভেঙে আমরা যাচ্ছিলাম ছোটবোন আর মা-বাবা, গ্রামের লোক তার পাশে আমি দুলালী না প্রিয়বালা? বাবা-মা’র ডাক বাড়িতে দুলালী বলে প্রিয়বালা নাম দিয়েছিল পাঠাশালা দু’তিন ক্লাসের লেখা-পড়া সবে শুরু গ্রামে কে বলল […]

মায়া

মায়া যেন সশরীর, চুপে চুপে মশারীর প্রান্তে এসে জ্বালছে দেশলাই ভেতরে ঘুমন্ত আমি—- বাতাস ও নিস্তব্ধতা এখন দর্শক রাত্রি এতো স্নিগ্ধ, এতো পরিপূর্ণ, যেন নদী নয় স্বপ্ন নয় স্বয়ং মায়ার হাত আমাকে আদর করে ঘুম পাড়ালো আবার কৌতুকে মেতে মশারিতে জ্বালাবে আগুন সমস্ত জানালা বন্ধ, দরজায় চাবি আহা কী মধুর খেলা, সশস্ত্র সুন্দর আমাকে জাগাও […]

দুঃখ করো না, বাঁচো

দুঃখকে স্বীকার করো না, –সর্বনাশ হয়ে যাবে । দুঃখ করো না, বাঁচো, প্রাণ ভ’রে বাঁচো । বাঁচার আনন্দে বাঁচো । বাঁচো, বাঁচো এবং বাঁচো । জানি মাঝে-মাঝেই তোমার দিকে হাত বাড়ায় দুঃখ, তার কালো লোমশ হাত প্রায়ই তোমার বুক ভেদ করে চলে যেতে চায়, তা যাক, তোমার বক্ষ যদি দুঃখের নখরাঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়; যদি গলগল […]

কথোপকথন-২৫

-হাত ঘড়িটা কি ছোঁ মেরেছে গাংচিলে? শকুন্তলার আংটির মত গিলেছে কি কোনো রাঘব বোয়াল-টোয়াল? -কেন? আসবার কথা কখন,এখন এলে? বসে আছি যেন যুগযুগান্ত,ভাঙা মন্দিরে উপুড় শালগ্রাম। চা খেলাম,খেয়ে সিগারেট,খেয়ে আবার-বেয়ারা,কফি। আর ঘড়ি দেখা এবং যে কোনো জুতোর শব্দে চমকে ওঠা। মনে হচ্ছিল অনন্তকাল প্রতীক্ষাটারও অন্য নামটা প্রেম । -স্যরি,সত্যিই। কী করব বল রাস্তায় যেন মাছি-থকথকে […]

কথোপকথন-৩৮

-নন্দিনী! আমার খুব ভয় করে ,বড় ভয় করে! কোনও একদিন বুঝি জ্বর হবে ,দরজা দালান ভাঙ্গা জ্বর তুষার পাতের মত আগুনের ঢল নেমে এসে নিঃশব্দে দখল করে নেবে এই শরীরের শহর বন্দর। বালিশের ওয়াড়ের ঘেরাটোপ ছিঁড়ে ফেলা তুলো এখন হয়েছে মেঘ,উঁড়ো হাস, সাঁদা কবুতর। সেই ভাবে জ্বর এসে আমাকে উড়িয়ে নিয়ে যাবে অন্য কোন ভুমন্ডলে […]

কথোপকথন-২৪

-তোমাকে আজকাল এত রোগা লাগে কেন শুভঙ্কর? খুব ম্রিয়মান লাগে যেন ঘন বর্ষাকাল,মেঘের ধুসর ডানা,জল-কোলাহল ছিড়ে-খুঁড়ে ফেলেছে তোমাকে। ভাঙা কোন মন্দিরের পুরনো গন্ধের মত লাগে। অতীত কালের কনো স্তম্ভে আঁটা শ্যাওলার মতো অতীতে সবুজ ছিলে,এখন শোকের মতো হীন। তোমাকে কি ঘিরে আছে কোন কারাগার? গ্রাদের কালো হাত,ঘন বৃক্ষজাল? অথবা তুমি কি হারিয়েছ,অত্যন্ত আপন কোন কিছু? […]

কথোপকথন-২২

তেরোই জুলাই কথা দিয়েছিলে আসবে । সেই মত আমি সাজিয়েছিলাম আকাশে ব্যস্ত আলর অজস্র নীল জোনাকি। সেই মত আমি জানিয়েছিলাম নদীকে প্রস্তুত থেকো,জলে যেন ছায়া না পড়ে মেঘ বা গাছের।তেরোই জুলাই এলে না। জ্বর হয়েছিল? বাড়িতে তো ছিল টেলিফোন। জানালে পারতে।থার্মোমিটার সাজাতাম। নীলিমাকে ছুঁয়ে পাখি হতো পরিতৃপ্ত

কথোপকথন-২০

-ইলাস্ট্রেটেড উইকলিতে তোমার তিনটে কবিতা ছাপা হল আমায় কিন্তু বলনি। মধুমিতার সঙ্গে দেখা এলিয়াসে,সেই আমাকে বলল। শুনে এমন রাগ হল যে ভেবেছিলাম বন্ধ করব দেখা। তুমি কোথায় কী লিখেছো তা শুনতে হবে হাটের লোকের মুখে ? সেই রাগেতেই চিঠির জবাব লিখেও তাকে কবর দিয়ে এলাম লেপ-তোশকের নীচে। -উপরে কাঁটা নীচে কাঁটা উঠতে বসতে লাথি-ঝাঁটা এমনি […]

কথোপকথন-১৬

ওগো সুন্দরী !মনে আছে কাল তেসরা জুন ? সেকি! ভুলে গেছো?তুমি তো দেখছি সাংঘাতিক! ভুলে গেলে তিথি প্রথম বিবাহ বার্ষিকীর? আজ্ঞে না এটা ঠাট্টা নয় বা ইয়ার্কি । ফিচেল হাওয়ারা যে ভাবে সজনে গাছের চুল চুলের বিনুনি ঘেঁটে দিয়ে করে মশকরা তুমি কি ভাবছো এটাও তেমনি খেলাচ্ছল? তুমি যা বলছো স্বীকার করছি।ইয়েস স্যার । বিয়ে […]

প্রস্ফুরিত কার্পাসে কুমকুম অভিমান

এই প্রস্তর হৃদয়ে এসেছিলে যেদিন মৌ মৌ বসন্তে ফুল ফুটেছিল, নাবালিকা, অপার বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখি তোমার অশ্রুতে চোখ ভিজে যায় আমার । মুছে ফেলে অভিমান, কাছে এসো- নিজে হাতে কষ্টগুলো ধুয়ে দিই; জলজ চোখের কোণায় নিবিষ্ট চুম্বনে গুমোট বুকে গড়ে দিই আশ্রয় তোমার । নাবালিকা, বিষুব ক্রান্তির ছায়াপথে বিছিয়েছি পৌরাণিক মায়াজাল, ধূলিশয্যায় ফুরসৎ নেই পৌনঃপুনিক […]