১. নষ্ট হয়ে যায় প্রভু, নষ্ট হয়ে যায়। ছিলো, নেই- মাত্র এই; ইটের পাঁজায় আগুন জ্বালায় রাত্রে দারুণ জ্বালায় আর সব ধ্যান ধান নষ্ট হয়ে যায়। ২. নষ্ট হয়ে যাবার পথে গিয়েছিলুম, প্রভু আমার! তুমি আমার নষ্ট হবার সমস্ত ঋণ কোটর ভরে রেখেছিলে। কিন্তু আমার অমোঘ মুঠি ধরে বুকের মোরগঝুঁটি সন্ধ্যাবেলা শুধু আমার মুখের রঙে […]
ঝরে পড়ার শব্দ জানে তুমি আমার নষ্ট প্রভু
চুপ করো, শব্দহীন হও
এত বেশি কথা বলো কেন? চুপ করো শব্দহীন হও শষ্পমূলে ঘিরে রাখো আদরের সম্পূর্ণ মর্মর লেখো আয়ু লেখো আয়ু ভেঙে পড়ে ঝাউ, বালির উত্থান, ওড়ে ঝড় তোমার চোখের নিচে আমার চোখের চরাচর ওঠে জেগে স্রোতের ভিতরে ঘূর্ণি, ঘূর্ণির ভিতরে স্তব্ধ আয়ু লেখো আয়ু লেখো আয়ু চুপ করো, শব্দহীন হও
এজলাশ
মাতঙ্গিনী হাজরাকে আমরা গুলি করে মেরেছি ধর্মাবতার সত্যি যে, মেরেছি আসামের স্কুলছাত্রী কনকলতা বরুয়াকে ঘরের বউ ভোগেশ্বরী ফুচননি-কে- সত্যি যে, দৈবাত আমরা নারীঘাতী, অসহায়ভাবে নারীঘাতী আমরা দৈবাত্। কিন্তু ভাবুন ধর্মাবতার, ভাবুন ঐ আন্দোলনওলাদের ধাষ্টামো “ভারত ছাড়ো’ হাঁক দিয়ে কাপুরুষেরা সামনে এগিয়ে দিয়েছিল মেয়েদের আমাদের হাত কলঙ্কিত করে দেবার জন্য ভাবুন কী ঘৃণ্য সেই চক্রান্ত, ধর্মাবতার। […]
কান্না
প্রেম নেই তবু প্রেমের কান্না মরেনি তুমি নেই তবু তোমাকে পাওয়ার বাসনার সোনা ঝরেনি এই সর্পিল জীবনের পথে আলগোছে ছুঁয়ে যাওয়া তুমি যেন কোন চৈত্র রাতের দূর সমুদ্র হাওয়া! তুমি নেই তবু একটি বিপুল বিস্ময় আছে মনে- হঠাৎ কখনো পাখি ডেকে যায় বনে, হঠাৎ কখনো বাতার পাশে হেনার গন্ধ জাগে; হঠাৎ কখনো দুঃস্বহ অনুরাগে একটি […]
অথচ
তোমাকে দেখে অবাক হয়ে যাই বারবার। এত আক্রমণ পরস্পরবিরোধী এত শোকমিছিলের মধ্যেও কী অনায়াসে বুনে যাচ্ছ লাল পশমের শৃঙ্খলা। উদ্ভিদের চেয়ে নীরব, ছাপানো মহাভারতের চেয়ে উদাসীন। অথচ পিছনের দেয়ালেই রক্তছাপ অথচ বুকের শাড়ি সরালেই অনাবৃষ্টির চৌচির।
সে
আমাকে সে নিয়েছিলো ডেকে; বলেছিলো: ‘এ নদীর জল তোমার চোখের মত ম্লান বেতফল: সব ক্লান্তি রক্তের থেকে স্নিগ্ধ রাখছে পটভূমি; এই নদী তুমি।’ ‘এর নাম ধানসিঁড়ি বুঝি?’ মাছরাঙাদের বললাম; গভীর মেয়েটি এসে দিয়েছিলো নাম। আজো আমি মেয়েটিকে খুঁজি; জলের অপার সিঁড়ি বেয়ে কোথায় যে চলে গেছে মেয়ে। সময়ের অবিরল শাদা আর কালো বনানীর বুক থেকে […]
সেই কবে থেকে
সেই কবে থেকে জ্বলছি জ্ব‘লে জ্ব‘লে নিভে গেছি ব‘লে তুমি দেখতে পাও নি । সেই কবে থেকে দাঁড়িয়ে রয়েছি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বাতিস্তম্ভের মতো ভেঙে পড়েছি ব‘লে তুমি লক্ষ্য করো নি । সেই কবে থেকে ডাকছি ডাকতে ডাকতে স্বরতন্ত্রি ছিঁড়ে বোবা হয়ে গেছি ব‘লে তুমি শুনতে পাও নি । সেই কবে থেকে ফুটে আছি ফুটে ফুটে […]
পুরাণ
হে পিতৃপুরুষবর্গ তোমরা মহৎ ছিলে জানি, রূপদক্ষ কীর্তির প্রভাবে আজো প্রাতঃস্মরণীয়, সে কথা বিশ্বাস করি । যে-প্রাসাদ করেছো নির্মাণ প্রজ্ঞায় অক্লান্ত শ্রমে, জোগায় তা কতো ভ্রাম্যমান চোখের আনন্দ নিত্য : অতীতের ডালপালা এসে চোখে-মুখে লাগে আর ফুটে ওঠে সৃষ্টির বিস্ময় । আরো গাঢ় অন্ধকারে ভিজিয়ে শরীর পেঁচা, কাক অথবা বাদুড় আসে শূন্য কক্ষে বিশাল প্রাসাদে […]
সূর্যকরোজ্জ্বলা
আমরা কিছু চেয়েছিলাম প্রিয়; নক্ষত্র মেঘ আশা আলোর ঘরে ঐ পৃথিবীর সূর্যসাগরে দেখেছিলাম ফেনশীর্ষ আলোড়নের পথে মানুষ তাহার ছায়ান্ধকার নিজের জগতে জন্ম নিল- এগিয়ে গেল; – কত আগুন কত তুষার যুগ শেষ করে সে আলোর লক্ষ্যে চলার কোন্ শেষ হবে না আর জেনে নিয়ে নির্মল নির্দেশ পেয়ে যাবে গভীর জ্ঞানের, – ভেবেছিলাম, পেয়ে যাবে প্রেমের […]
তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি
তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি কতোবার দ্বারস্ত হয়েছি আমি গীতিকবিতার, কতোদিন মুখস্ত করেছি এই নদীর কল্লোল কান পেতে শুনেছি ঝর্ণার গান, বনে বনে ঘুরে আহরণ করেছি পাখির শিস্ উদ্ভিদের কাছে নিয়েছি শব্দের পাঠ; তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি সংগ্রহ করেছি আমি ভোরের শিশির, তোমাকে লেখার মতো প্রাঞ্জল ভাষার জন্য সবুজ বৃক্ষের কাছে জোড়হাতে দাঁড়িয়েছি আমি- […]