হিসেব

কতটুকু ভালোবাসা দিলে, ক তোড়া গোলাপ দিলে, কতটুকু সময়, কতটা সমুদ্র দিলে, কটি নির্ঘুম রাত দিলে, কফোঁটা জল দিলে চোখের – সব যেদিন ভীষণ আবেগে শোনাচ্ছেলে আমাকে, বোঝাতে চাইছিলে আমাকে খুব ভালোবাসো; আমি বুঝে নিলাম- তুমি আমাকে এখন আর একটুও ভালোবাসোনা। ভালোবাসা ফুরোলেই মানুষ হিসেব কষতে বসে, তুমিও বসেছো। ভালোবাসা ততদিনই ভালোবাসা যতদিন এটি অন্ধ […]

তোমার নাম লিখতে লিখতে

এ পর্যন্ত তেত্রিশ কোটি বার তোমার নাম লিখেছি। তোমার নাম লিখতে লিখতে হাত ক্লান্ত হয়েছে, চোখ তবুও ক্লান্ত হয় না। দেখতে চায় তোমার নামের শ্রী, বানান, ব্যাকরণে এবং সম্মিলিত শব্দের চেহারায়। যেখানে তিনটি অক্ষরের ক্রমিক আড়াল ভেঙে বেড়িয়ে আসে তোমার হারিয়ে যাওয়া মুখ, গৌরচিক্কন কন্ঠনালী, কোঁকড়ানো চুলের এলানো খোঁপায় জড়ানো একটুকরো লাল ফিতে। কালো চশমার […]

লজ্জা

আমি জানি, সে তার প্রতিকৃতি কোনোদিন ফটোতে দেখেনি, আয়নায়, অথবা সন্দ্বীপে বসে যেরকম সর্বনাশা সমুদ্রে দেখা যায়, তার জলে মুখ দেখে হঠাৎ লজ্জায় সে শুধুই ম্লান হতো একদিন । আমি জানি পিঠ থেকে সুতোর কাপড় কোনোদিন খোলেনি সে পুকুরের জলে, -লজ্জা, সমস্ত কিছুতে লজ্জা ; কন্ঠে, চুলের খোঁপায়, চোখের তারায়। আমি জানি আসন্নপ্রসব-অপরাধে, অপরাধবোধে স্ফীতোদর […]

প্রেম

We must Love one each other or die–W.H.Auden না, প্রেম সে কোন ছিপছিপে নৌকো নয়- যার চোখ, মুখ, নাক ঠুকরে খাবে তলোয়ার-মাছের দঙ্গল, সুগভীর জলের জঙ্গলে সমুদ্রচারীর বাঁকা দাঁতের জন্যে যে উঠেছে বেড়ে, তাকে, হ্যাঁ, তাকে কেবল জিজ্ঞেস ক’রো, সেই বলবে না, প্রেম সে কোনো ছিপছিপে নৌকো নয়, ভেঙে-আসা জাহাজের পাটাতন নয়, দারুচিনি দ্বীপ নয়, […]

দেখে এসো একবার

ছাদের কোনায় টবের গোলাপটা মনে আছে? তোমাকে অভিবাদন জানাতে দুলে উঠেছিল মন্দ্র। কোমল ওষ্ঠে মাখিয়ে দিয়েছিল পরাগ; তর্জনীতে তোমার বিঁধে গিয়েছিল কুসুম রক্ষীর কাঁটা… তুমি কিন্তু এক ফোঁটাও রাগ করনি। এখন সে বাক্সবন্দী… বটানি খাতার পাতায় শুষ্ক। পারো যদি, দেখে এসো একবার… গ্রিলের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসা সেই বেড়াল ছানাটা মনে পরে? নির্ভাবনায় এসে শুয়ে […]

সব বলে দেব

সব বলে দেব- তোমার সাথে প্রথম দেখা, অসংলগ্ন অনুভুতি, ঘোর লাগা সেই বিকেল, সব|   বলে দেব- খুব দ্রুত ঘটে যাওয়া অবৈধ কিছু দৃশ্য, আমি বলব,আমি বুঝি নি বোঝার হেতুও খুঁজি নি| আমি কেবলই বিরক্ত হতাম- কারো অস্থায়ি বিয়োগে, অথবা; উপস্থিতির সতের সেকেন্ডের মিনিটে!   বলে দেব- লজ্জাহীন ছিল সকাল, অত্যাচারে রক্তিম ছিল বিকেল, আরো […]

এখন দূরে ডাকছে কেউ

তোমার যদি ঘুম পেয়েছে, ঘুমোতে যাও তুমি আমার নেই বিছানা, নেই ঘর। তারার নিচে এখন চিৎ আমার জন্মভূমি চতুর্দিকে ক্রন্দনের স্বর। এখন চাঁদ অন্নহীনের শূন্য কাঁসার থাল আছাড় দেয় আলো মাটির ‘পর। আমার চোখে ঘুম আসে না, নদীর পানি লাল হাড়ের মতো শাদা নদীর চর। এখন দূরে ডাকছে কেউ, পাথার ভেঙে আসে ও কার এত […]

কেউ কি এখন

কেউ কি এখন এই অবেলায় আমার প্রতি বাড়িয়ে দেবে হাত? আমার স্মৃতির ঝোপেঝাড়ে হরিণ কাঁদে অন্ধকারে এখন আমার বুকের ভেতর শুকনো পাতা, বিষের মতো রাত । দ্বিধান্বিত দাঁড়িয়ে আছি একটি সাঁকোর কাছাকাছি, চোখ ফেরাতেই দেখি সাঁকো এক নিমিষে ভাঙলো আকস্মাত্‍ । গৃহে প্রবেশ করবো সুখে? চৌকাঠে যায় কপাল ঠুকে । বাইরে থাকি নত মুখে নেকড়েগুলো […]

রবীন্দ্রনাথ তোমার কবিতা উয়িদড্র করো

রবীন্দ্রনাথ তোমার কবিতা তুমি ফিরিয়ে নাও। বড্ড বেশি মিথ্যে কথা ফেলেছো লিখে তোমার কবিতা তুমি ফিরিয়ে নাও। মানস সুন্দরী বলে কাউকে তো দেখি না কোথাও কোনো খানে… ওরা মানস সুন্দরী নয়-ওরা ফানুস ভালবাসা নয় ওরা কসমেটিকসের জঘন্যতম পুজারী ও কবিতা ফিরিয়ে নাও রবীন্দ্রনাথ। যেতে নাহি দেবো বলে না তো কেউ ঘৃণার নৃশংস কন্ঠে বলছে সবাই […]

ছিল সে-ও

ছিল সে-ও ধুলোর নিঃসঙ্গ পথে, ছিল কোলাহলে সমর্পিত চিরদিন। দিঘি তাকে চেয়েছিল বলে সোনার শরীর নিয়ে ব্যর্থ হল নারী। ডুবিয়ে পায়ের পাতা, সহচরী শাড়ি ডুবিয়ে নিঃসঙ্গ জলে নামল যখন- ঝাপসা চোখ, মেঘ হল মন। অত শান্ত জলের কুহকে তার সমাজ সংসার হবে লীন কেই তাকে বলেনি সেদিন। মাচায় অর্পিতা লতা জানে যার প্রীত পরিচয়, ভুলব […]