স্বপ্নভ্রমণ

এই হাত ধরো, আমরা নক্ষত্রপথে হেঁটে বেড়াই, মেঘমহলে বিচরণ করি পৃথিবীর বৃহত্তম জলরাশির ওপর দিয়ে হেঁটে যাই, এই হাত ধরো মুহূর্তে স্বপ্নভ্রমণে বেরিয়ে পড়ি। একটু উষ্ণতা দাও ঝমঝম বৃষ্টি হয়ে ঝরি, একবার সঞ্চায়িত করো স্পর্শের বিদ্যুৎপ্রবাহ আমি মূলসুদ্ধ কেঁপে উঠি, অর্ধেক এখানে রাখি অর্ধেক আকাশে উড়াই; এই হাত ধরো আমি হই জাদুমন্ত্র, আমি হই ম্যাজিক […]

যা ছিল অনন্ত মধুর

জীবনে যা ছিল খুব অনন্ত মধুর যা ছিল নিকট খুব, যা ছিল সুদূর, কাম্য যা ছিল এই মর্ত্যে, সংসারে লুকানো শব্দের বীজ আলোয় আঁধারে; আজ তাকে খুঁজি, পাই না কোথাও যা আছে তোমার তুমি তার কাছে যাও। তাকে দাও ভালোবাসা, তাকে দাও ছায়া সে অদৃশ্য বিমূর্ত হবে অপরূপ কায়া, তাই নিয়ে মেতে থাকো, বাঁধো ভাঙা […]

পাবলো নেরুদার কবিতা

অনুবাদ: মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আর সেই বয়সে…কবিতা এসেছিল আমার খোঁজে। আমি জানি না, আমি জানি না কোথা থেকে তা এসেছিল, শীত না নদী থেকে। আমি জানি না কেমন করে বা কখন, না, তারা কণ্ঠস্বর নয়, তারা নয় শব্দ বা নৈঃশব্দ্য। কিন্তু আমাকে ডাক দেওয়া হয়েছিল এক রাস্তা থেকে রাত্রির শাখাপ্রশাখা থেকে, আচমকা অন্যদের মাঝখানে থেকে, […]

ঝরার গান

পাতা ঝরছে পাতা ঝরছে, ঝরছে প্রাণ এই পৌষের ঠান্ডা হাওয়ায় লেপের ঘ্রাণ লাগছে এসে আমার নাকে আমার দেহে— কী আরাম! হাত দিও না তোমার হাতে শীতের ঢেউ শীত নিয়ে আজ গীত বেঁধেছি আসবে কেউ, আসুক তবে হাসুক তবে কথার ঢেউ— শীতে পালায় গীতের নেশা আমার নাম! তবু তো শীত ভীত কাঁপানো বাড়ায় হাত হাত দিও […]

সেবার শীতের অগ্নি

সেবার অঘ্রানে শীত হাড়ে হিম নিয়ে নেমেছিল, সেবার শত্রুর সাথে গ্রীষ্মকালে যুদ্ধ শুরু হয়। পুরনো বন্দুক! আর, কার্তুজেরও খুব টান ছিল— কেবল প্রচুর ছিল আগুনের কাঠ বনময়। তবুও আগুন জ্বেলে অঘ্রানের শীত তাড়াবার উপায় ছিল না—হেতু, অবস্থান শত্রু জেনে যাবে। হিম সহ্য করে যাচ্ছি, আমাদের হাত-পা অসাড়, অথচ আঙুল ছিল ট্রিগারেই—সতর্কতা চাপে! এবং করোটি জুড়ে […]

অমাবস্যা চিরে যাক

কী কথা তাহার সাথে? তার সাথে? প্রশ্ন প্রেমিকের যখন প্রেমিকা তার কথা বলে অপরের সাথে। ওটি কি কাব্যেই শুধু? ওই ভাষা- জীবনানন্দের। এখনও কি তরুণ প্রেমিক তার প্রমিত ভাষায়? পথ চলতে থেমে যাই!- ওর লগে তুই কি করোস? কিয়ের প্যাচাল এত? উত্তরে সে, তুই কি জেলাস? দিন পরে দিন যায়, সরোদের টংকারে খরজ। বানরের হাতে […]

মেধাবী নাবিক তুমি

রচুর চোখের জল, মগজেও মাতাল জাহাজ, বেহেড বাতাস খুব পরামর্শ দিয়ে বেসামাল করতে চাইছে এই কলমের নিবটিকে আজ- এর মধ্যে কোথায় শব্দের মাল্লা ওড়াবে যে পাল? তবু কি নিস্তার আছে? অচিরেই উঠবে যে ঝড় সে বিষয়ে আমি ছাড়া কে আর নাবিক এই স্থলে? কবেই উৎসন্ন গ্রাম, কলেরায়- বসন্ত তৎপর তদুপরি! ডাকে দূর সমুদ্রটি কলকলকলে। অতএব […]

সখ্য

তোমার জন্য বৃষ্টি বাদল আমার জন্য রাত্রি গহন তোমার দিকে শ্যামলছায়া আমার বুকে লঙ্কাদহন, তোমার হাসি পৌর্ণমাসী সৌরনদী উতল হয় তোমার জন্য ঘর বেঁধেছি তোমার জন্য সূর্যোদয়, তেপান্তরের ডাক পেয়েছি বকুলবাগান বন্ধকি এক ডুবেতে ভোমরা টিপে রক্তসাঁতার মন্দ কি, তোমার জন্য উতল পবন গ্রীষ্মদেনা উসুল করে তপ্ত কড়াই রপ্ত এখন তিরিশ রকম ফোসকা পড়ে, সদ্যকাটা […]

মকবুল সমুদ্রে যাবে

কায়েদি আজম যখন তেঁজগাও বিমান বন্দর থেকে হাজার হাজার মানুষের পাঁজর ভেদ করে বিকেলের হঠাৎ বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া তরুনগুলির তেরচ্ছা কুর্নিশ নিতে নিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, মকবুল তখন নদীর ধারে পলির ভেতরে পা ডুবিয়ে, গর্তে লোহার শিক ঢুকিয়ে বড় বড় কাকড়া বের করে আনছিল। আইয়ুবের মার্কিন খাপ থেকে যেদিন ইয়াহিয়া খা মরচে ধরা তলোয়ার বকশিক […]

শ্রীকান্ত মনিদাস

আমাদের পাড়ায় ফুটপাতের ধারে বসে জুতো পালিশ করে, সেলাই করে, তাপ্পি লাগায়। থাকে আজিমপুরের এক-কামরার এক ভাড়াবাড়িতে। ভাড়া মাসে ১৫০০ টাকা। দাদার জমিজিরেত ছিলো। কিশোরগঞ্জে। সেসব বেচে খেতে খেতে কিছুই আর নেই। বাপ বাধ্য হয়ে নামে মুচি হিসেবে। শ্রীকান্তও বাপের পথ ধরেছে। যে-দোকানগুলোর সামনে বসে, সেখানেই কোথাও রাত্রিবেলা রেখে দ্যায় ওর জিনিসপত্তর ওর জীবনসংগ্রামের সামান্য […]