জীবনতৃষ্ণা

বহুক্রোশ হাঁটা পথিকের মতো আর জাগে না জলের তৃষ্ণা, মাঝে মাঝে শুধু একটু গলা ভেজানোর ইচ্ছা হয়; কিন্তু তখন কী সে তৃষ্ণা, ইচ্ছা করে শুষে নিই গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, কুশিয়ারা অাঁজলা ভরে খেতে চাই পৃথিবীর সব নদী সমুদ্রের জল মনে হয় তাতেও মিটবে না তৃষ্ণা, নিষেধ অমান্য করে নেমে যাই মৃত্যু সরোবরে, এমন কোথায় সে আকুল […]

জড় ও চৈতন্যের দ্বৈরথ

উৎস-মুখের স্বচ্ছ জলের তলে খড়কুটো নয়, পাথর পড়ে থাকে; প্রতিবন্ধক দারুণ প্রবল বলে নদীর উৎসে ক্ষিপ্র খরধারা। জলের মধ্যে ধাউর পাথররাশি জলের বাইরে অর্থহীন জড়; উষ্ণ জলের গতিচঞ্চলতা পাথর দাঁড়ায় রুদ্ধ করে দিতে; কিন্তু খুবই মজার ব্যাপার হলো পাথর শুধুই হচ্ছে পরাজিত। উৎস-মুখের ঠান্ডা পাথররাশি খুব কিছু নয়, ঠান্ডা পাথররাশি!! –

ঘুণপোকা

ঘুণপোকা আজ যৌবন কুরে খাচ্ছে নতুন স্বপ্ন অচেনা হাওয়ায় ভাসছে অমিত সাহস পকেটে আটকে ঘুরছি জ্বালানো আগুনে নিজেই এখন পুড়ছি। করতল থেকে মুছে যায় সৌভাগ্য ভুঁইফোড় আমি নিজেকে ভেবেছি প্রাজ্ঞ অন্ধকারের জানালায় ডাকে পক্ষী অরণ্যে নেই পাহারার বনরক্ষী। ফুল থেকে আর পাইনাতো কোনো গন্ধ বিবেক ঘুমায়, নেই তার মনে দ্বন্দ্ব ব্যাঘ্র-জীবন হারিয়ে ফেলেছে গর্জন সিন্দুক […]

হিরেন বাবু বলেছেন

দৈব ক্রমে দেখা। স্বপ্নে। তাকে। ঈশ্বর পেতেছেন সোনালী জাল ধীবরের সাথে। প্রহরান্তে স্বপ্নফল গুনে দেখি, শূন্য পড়েছে আমার সেবায়। জ্যোতিষী হিরেন বাবু বলেছেন, কৃষ্ণপক্ষের দ্বিতীয়ার স্বপ্ন বিলম্ব হলেও সত্য হতে পারে। যদি ধীবরের হাতে থাকে মহিলার ঠিকানা সমূহ। নারীকুলের ডাকিনীরা নেমেছে শুক্লপক্ষে ঈশ্বরের বিশেষ কৃপায়। সোনালী জাল কেটে দিয়ে নিয়ে যেতে চায় আমাকে আমি যে […]

বরকতের সঙ্গে লাঞ্চ করার কথা ছিলো

বরকতের সঙ্গে আমার দুপুরে লাঞ্চ করার কথা ছিলো। খুব ভোরে বেরিয়ে যাবার সময় হলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বলেছিলো, শাদাভাতের সাথে আলুভর্তা আর গরম ডালের সুস্বাদু ঘ্রাণ ফাল্গুনের মগ্ন বাতাস ছড়িয়ে দেবে ঢাকা শহরে। আমি মিছিল শেষ করে চলে যাবো নবাবপুর রোডের শাহী রেস্তোরাঁয়। আকাশে ছেঁড়াখোঁড়া মেঘের আনাগোনা আর কলাভবনের চারপাশে পুলিশের বেষ্টনী দেখে আমি বলেছিলাম, পকেটে […]

নুড়িপাথর

পুরনো বছরের নুড়িপাথরগুলো, একবার আদ্যোপান্ত ঘেঁটে দেখলে কেমন হয়? পরক্ষণে উঠবে না তো আবার তুমুল শোরগোল ঘাঁটাঘাঁটি করে কীই-বা লাভ_ পরিত্যক্ত বর্জ্য নিয়ে কেউ কি আর মাথা ঘামায় তেমন শুধু ছোট রানীরই নয় ঘুঁটে কুড়োনিরও দেমাক ভারী! ওহে ভস্মলোচন চন্দ্রবদন, গুনতে হবে যে গাঁটের কড়ি তার বদলে কি কি চাও তাও জানি _না না দিব্যি […]

ঘুমের স্বপ্নে আজ

কাকে যেন আমি পথে রেখে একা বাঁক ঘুরে বহুদূরে এসেছি এখানে গঞ্জে ও গ্রামে পরিচিত কেউ নেই আছে শুধু স্মৃতি আছে বিস্মৃতি নিদ্রার শীতলতা আমার ঘুমের স্বপ্নেও আজ ভাসে না তোমার নাম। এখন একাকী অস্তাচলের যাত্রী আমি কি একাই? অথচ ভাবনায় আছো তুমি ঠিকই কে দেবে এর নাম নাম নেই আর গ্রাম নেই শুধু আছে […]

মনে রেখো তুমি কবিকে তোমার

তখন আসীন পূর্ণিমা চাঁদ আকাশ সিংহাসনে_ কবিও কলম হাতে নিয়ে খুব মেধাবী নদীতে দিচ্ছিল ডুব, জ্যোৎস্নার রূপ ভাষায় ফোটাবে_ এই ছিল তার মনে। হঠাৎ কখন ধেয়ে আসে বেগে বিরূপ ঝড়ের মেঘ, চাবুকের মতো মারছে যে হাওয়া বিঘি্নত হয় তার লিখে যাওয়া। যুদ্ধেই তবে যেতে হয় বুঝি_ দেখা দিলো উদ্বেগ। এবং তখনও তার দুই চোখে রূপকল্পের […]

রাত্রি, গোলপার্ক

সে যদি আমার শিশু হত? আটখানা-একটাকা-সিকি চারদিকে ছড়িয়ে ঘুমিয়েছে ফুটপাথে চটের ওপর গায়ে একটা ছেঁড়াফাটা কাপড় কে চাপা দিল? মা কোথায়, ওর? আজকে ৩১/৩২__রাত ১০টা। কিছুক্ষণ পর এ ফুটপাথে পা রাখবেন নতুন বছর। তার আগেই শীত ওকে মেরে ফেলবে না তো? বাইক মারুতি সুমো, দুল পরা ছেলে আর শিস দেওয়া তরুণী ময়ূর উড়ে পার হয় […]

তুমি আর নেই সে তুমি

তুমি বললে মানবতা আমি বললে পাপ বন্ধ করে দিয়েছে দেশ সমস্ত তার ঝাঁপ। তুমি বললে হিটলারি-ও জনপ্রেমে ভরা আমি বললে গজদন্ত তুমি বললে ছড়া। তুমি বললে বাঁচার দাবি আমি বললে ছুতো হামলে কেন এল সবাই দিব্যি খেত শুত। হোক না জীবন শুকনো খরা বন্ধ্যা বা নিষ্ফলা। আমি বললে সেপাই দিয়ে উপড়ে নেবে গলা। তুমি বললে […]