সবুজে ও নীলজলে

যে কথা শোনার জন্যে উৎকর্ণ সবাই কেউ না কেউ সে কথা বলবেই জানি, বলতে তাকে হবে- যে জন অর্জন আজ করেছে যোগ্যতা দীর্ঘ অনুধ্যানে সে কথা শুনবে তারা পাহাড়ে-পর্বতে-সমতলে বসবাস করে যারা অনন্য মানুষ, অবশ্যই ‘সে’ও ক্রমে পরিণত হবে ‘তিনি’ত্বের মর্যাদায়; তিনি তো আছেন আমাদেরই মধ্যে দীনহীন বাস তাঁর দীর্ঘদিন এই সবুজে ও নীলজলে, সমতটে […]

নীরবতার কয়েক অক্ষর

পায়ের কাছে সবুজ এক সাপ, ফণা তোলে না, ফণাই নেই তার। গুটিয়ে আছে মানব-মনস্তাপ। নির্জনতায় পুরনো পুকুরপাড়। কী হতো ওই ফণাটি যদি পেত, বিষের নীলে আকাশভরা নীল জাড্য তবে কোথায় দূরে যেত! তারায় তারা হাসত খিলখিল! চমকে সরে গেলাম চলার পথে, বিষ আছে কি বিষ নেই ও সাপে? বাঁচাটাই তো এখন কোনোমতে! পাল্লাতে কে পাপের […]

মুজিবের মুখ ও অন্যান্য কবিতা

মুজিবের মুখ মানে বাঙালির মুখ মুজিবের মুখ মানে বাঙালির সুখ মুজিবের মুখ মানে নদী আঁকাবাঁকা মুজিবের মুখ মানে প্রগতির চাকা মুজিবের মুখ মানে নৌকার পাল মুজিবের মুখ মানে কৃষকের হাল মুজিবের মুখ মানে জেলেজোলাতাঁতী মুজিবের মুখ মানে বাঙালির জ্ঞাতি মুজিবের মুখ মানে হালের লাঙল দাড়ীমুখে সারিগান পাহাড়িয়া ঢল মুজিবের মুখ মানে ধান আর পাট ধনধান্যপুষ্পময় […]

ট্রাফিক সিগন্যাল

…the Policeman crucified at the crossroads – Mayakovsky সব মানুষ না কেউ কেউ মরে যাবার পর আকাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে হতভম্ব ট্রাফিক পুলিশের মতো তারাদের যাওয়া আসা দেখে আমি কি এরকম কাউকে চিনতাম যাকে কেউ যেতে দেখেনি যাকে চলে যেতে হয়েছিল অস্পষ্ট চোখে ব্যাপারটা বুঝে ওঠার আগে কিছুতেই আমি ভুলে যেতে পারি না সেই অন্ধকার […]

কালীদহ

সব কিছুই জানেন তিনি, শুধু জানেন না আমাকে। খরতাপে পুড়ে যায় দেহ, চৈত্র দাহে প্রেম। কাঙ্ক্ষিত আশা। আমাকে না জানিয়ে কাঁদে ঘন কালো মেঘ, মধ্যযামে ভেজা কণ্ঠে রাত জাগা, শিয়াল, ইঁদুর। আয় কাছে আয়, তোকে বৃষ্টি দেব কপালে চন্দন আষাঢ়, শ্রাবণে। আমি নিশ্চিত কেউ কিছু দেবে না আমাকে, শুধু জানি হয়তো বা কেউ থাকবেন জেগে […]

দখলীস্বত্বের বাড়ি

সেতুকে ওপরে রেখে নদী বয়ে যায়। নদীকে গভীরে রেখে সেতুদের আড়ি। তাই কি জলের সঙ্গে স্রোত দাঁড় বায়? দ্বীপ-চরে বেড়ে ওঠে একাকিনী বাড়ি। বাঁকা জল আঁকা জল, মাঝখানে বাড়ি। গৃহস্থের চালাবাড়ি, হে নগরবাড়ি! আড়ালে ঘুমটো-মুখ, হে ব-দ্বীপবাড়ি। দখলীস্বত্বের বাড়ি, খুব দরকারি। ভিটি ছেড়ে মাটি ছেড়ে মাঝি গলা ছাড়ে। সাঁতরায় ডিঙিনৌকা। গাঙ দেয় পাড়ি। দখলীস্বত্বের বাড়ি, […]

খারাপ সময়

খারাপ সময় কখনও একলা আসে না তার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ আসে তাদের বুটের রঙ কালো খারাপ সময় এলে রুমাল দিয়ে হাসি মুছে ফেলতে হয় ফুসফুস গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যায় জুয়ার বাজার মরা জন্তুর মতো ফুলতে থাকে ভালোবাসার গলা কামড়ে ধরে ঝুলতে থাকে ভয় ল্যাম্পপোস্টের ওপর থেকে হতভাগ্যরা গলায় দড়ি দিয়ে ঝোলে তাদের ছায়ায় কালোবাজারীরা লুকোচুরি […]

কচিপাতার বুকের মধ্যে

তোমার কণ্ঠস্বর মনে হয় যেন স্নিগ্ধ পাইনবীথি তুমি অনন্তের মধ্যে যে এক উদাসীন গায়ক পাখি; তোমার কণ্ঠে বনভূমির জঙ্গল বাতাসের শব্দ তোমার বুকে রাত্রিদিন অনন্ত উত্থান-পতন, ভাঙাগড়া। তুমি যখন কথা বলো, মনে হয় গান গাইছে বাতাস তোমার কণ্ঠে শুনতে পাই পুরনো দিনের গান; হঠাৎ মন যেন কেমন করে ওঠে, তোমার কাছে ছুটে যাই, আমার নিজের […]

সাপ্তাহান্তিক দিনরাত্রি

সারা রাত রবীন্দ্র সঙ্গীত সারা রাত অশ্রুভেজা চোখ সারা রাত অপার্থিব শীত, সারা রাত বিষন্ন আলোক! সারা দিন কর্মহীন; গ্লানি, সারা দিন ম্রিয়মাণ রোদ, সারা দিন হিরন্ময় ম্লানই- সারা দিন তিলক কামোদ! সারা রাত স্নিগ্ধ মোমবাতি সারা দিন স্মৃতিহীন তাঁতী।

কবিদের প্রতি নারীগণ

তিনি যেদিকে লইয়া যাইবে আমাকে সেই দিকেই যাইবো। ভাবিয়াছিলাম দিন আমার এমনি করিয়া হয়তো কাটিয়া যাইবে অথচ, তাহার সহিত না গিয়া যদি অগ্নিকুন্ডে ঝাঁপ দিতাম তাহা হইলে পাইতাম নিষ্কৃতি, নিস্তার। তবুও গিয়াছিলাম তাহার সহিত। পথিমধ্যে এক খঞ্জের সহিত সাক্ষাৎ তিনি একতারা না বাজাইয়া, আমাকে অবলোকন করিলেন দুই, এক, মিনিট বলিলেন, দিন সমান যায় না আঁকাবাঁকা […]