হিরণবালা

৫৪. হিরণবালা হিরণবালা তোমার কাছে দারুন ঋণী সারা জীবন যেমন ঋণী আব্বা এবং মায়ের কাছে। ফুলের কাছে মৌমাছিরা বায়ুর কাছে নদীর বুকে জলের খেলা যেমন ঋণী খোদার কসম হিরণবালা তোমার কাছে আমিও ঠিক তেমনি ঋণী। তোমার বুকে বুক রেখেছি বলেই আমি পবিত্র আজ তোমার জলে স্নান করেছি বলেই আমি বিশুদ্ধ আজ যৌবনে এই তৃষ্ণা কাতর […]

হিজলতলীর সুখ

৫৩. হিজলতলীর সুখ বলাই বাহুল্য আমি রাজনীতিবিদ নই, সুবক্তাও নই তবু আজ এই সমাবেশে বলবো কয়েক কথা সকলের অনুমতি পেলে। –’বলুন, বলুন’। রঙিন বেলুন দিয়ে মন ভোলানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই, উপস্থিত সুধী, কেউ ভুলে মনেও করবেন না আমি পারমিট, পেঁয়াজ আর পারফিউম ন্যায্যমূল্যে দেবো। –’পেঁয়াজটা পেলে ভালো হত’। আর কতো? যারা দিতো তারা আর […]

সম্প্রদান

৫২. সম্প্রদান ভাদ্রের বর্ধিত আষাঢ়ে সখ্য হয়েছিলো। সে প্রথম, সে আমার শেষ। পথে ও প্রান্তরে, ঘরে, দিতে রাতে, মাসে ও বছরে সমস্ত সাম্রাজ্য জুড়ে সে আষাঢ় অতোটা ভেজাবে আমি ভাবিনি কসম। আমার সকল শ্রমে, মেধা ও মননে নিদারুণ নম্র খননে কী নিপুণ ক্ষত দেখো বানিয়েছে চতুর আষাঢ়। একদিন সব কিছু ছিলো তোর ডাক নামে, পোড়ামুখী […]

শামুক

৫১. শামুক ‘অদ্ভুত, অদ্ভুত’ বলে সমস্বরে চিৎকার করে উঠলেন কিছু লোক। আমি নগরের জ্যেষ্ঠ শামুক একবার একটু নড়েই নতুন ভঙ্গিতে ঠিক গুটিয়ে গেলাম, জলে দ্রাঘিমা জুড়ে যে রকম গুটানো ছিলাম, ছিমছাম একা একা ভেতরে ছিলাম, মানুষের কাছে এসে নতুন মুদ্রায় আমি নির্জন হলাম, একাই ছিলাম আমি পুনরায় একলা হলাম। ২৯.৭.৮০

লাবণ্যের লতা

৫০. লাবণ্যের লতা দুরভিসন্ধির খেলা শেষ হয়ে কোনোদিন দিন যদি আসে, এই দেশে ভালোবেসে বলবে মানুষ, অনন্বিত অসন্তোষ অজারকতার কালে এসে লাবন্যের লকলকে লতা এক খুব কায়ক্লেশে একদিন তুলেছিলো বিনয়াবনত মাথা এতোটুকু ছিলো না দীনতা। অকুলীন এই দিন শেষ হয়ে কোনোদিন দিন যদি আসে, শুভ্রতায় স্নিগ্ধতায় সমুজ্জল মানুষ এদেশে বলবে সূর্যের দিকে ছিলো সেই লতাটির […]

রাডার

৪৯. রাডার একটা কিছু করুন। এভাবে আর কদিন চলে দিন ফুরালে হাসবে লোকে দুঃসময়ে আপনি কিছু বলুন একটা কিছু করুন। চতুর্দিকে ভালোবাসার দারুণ আকাল খেলছে সবাই বেসুর-বেতাল কালো-কঠিন-মর্মান্তিক নষ্ট খেলা, আত্মঘাতী অবহেলো নগর ও গ্রাম গেরস্থালি বনভূমি পাখপাখালি সব পোড়াবে, সময় বড়ো দ্রুত যাচ্ছে ভাল্লাগে না ভাবটা ছেড়ে সত্যি এবার উঠুন একটা কিছু করুন। দিন […]

খাল

৪৮. খাল আমি কোনো পোষা পাখি নাকি? যেমন শেখাবে বুলি সেভাবেই ঠোঁট নেড়ে যাবো, অথবা প্রত্যহ মনোরঞ্জনের গান ব্যাকুল আগ্রহে গেয়ে অনুগত ভঙ্গিমায় অনুকূলে খেলাবো আকাশ, আমি কোনো সে রকম পোষা পাখি নাকি? আমার তেমন কিছু বাণিজ্যিক ঋণ নেই, কিংবা সজ্ঞানে এ বাগানে নির্মোহ ভ্রমণে কোনোদিন ভণিতা করিনি। নির্লোভ প্রার্থনা শর্ত সাপেক্ষে কারো পক্ষপাত কখনো […]

যেভাবে সে এলো

৪৭. যেভাবে সে এলো অসম্ভব ক্ষুধা ও তৃষ্ণা ছিলো, সামনে যা পেলো খেলো, যেন মন্বন্তরে কেটে যাওয়া রজতজয়ন্তী শেষে এসেছে সে, সবকিছু উপাদেয় মুখে। গাভিন ক্ষেতের সব ঘ্রাণ টেনে নিলো, করুণ কার্নিশ ঘেঁষে বেড়ে ওঠা লকলকে লতাটিও খেলো, দুধাল গাভীটি খেলো খেলো সব জলের কলস। শানে বাধা ঘাট খেলো সবুজের বনভূমি খেলো উদাস আকাশ খেলো […]

যুগল জীবনী

৪৬. যুগল জীবনী আমি ছেড়ে যেতে চাই, কবিতা ছাড়ে না। বলে,–’কি নাগর এতো সহজেই যদি চলে যাবে তবে কেন ঘর বেঁধেছিলে উদ্ধাস্তু ঘর, কেন করেছিলে চারু বেদনার এতো আয়োজন। শৈশব কৈশোর থেকে যৌবনের কতো প্রয়োজন উপেক্ষার ‘ডাস্টবিনে’ ফেলে মনে আছে সে-ই কবে চাদরের মতো করে নির্দ্বিধায় আমাকে জড়ালে, আমি বাল্য-বিবাহিতা বালিকার মতো অস্পষ্ট দু’চোখ তুলে […]

যার যেখানে জায়গা

৪৫. যার যেখানে জায়গা ভোলায়া ভালায়া আর কথা দিয়া কতোদিন ঠাগাইবেন মানুষ ভাবছেন অহনো তাদের অয় নাই হুঁশ। গোছায়া গাছায়া লন বেশি দিন পাইবেন না সময় আলামত দেখতাছি মানুষের অইবোই জয়। কলিমুদ্দিনের পোলা চিডি দিয়া জানাইছে,–’ভাই আইতাছি টাউন দেখতে একসাথে আমরা সবাই, নগরের ধাপ্‌পাবাজ মানুষেরে কইও রেডি অইতে বেদম মাইরের মুখে কতোক্ষণ পারবো দাঁড়াইতে।’ টিকেট […]