জুয়া

অত্যান্ত ঠান্ডা মাথায় জীবন বদলে নিলাম আমি ও নিখিলেশ, হাতঘড়ি ও কলম, পকেট বই, রুমাল- রেডিওতে পাঁচটা বাজলো, আচ্ছা কাল দেখা হবে,- বিদায় নিলাম,- সন্ধেবেলার রক্তবর্ণ বাতাস ও শেষ শীতের মধ্যে, একা সিঁড়ি দিয়ে নামবার সময় মনে পড়লো- ঠিকানা ও টেলিফোন নাম্বার এসবও বদলানো দরকার, যেমন মুখভঙ্গী ও দুঃখ, হাসির মুহূর্ত নিখিলেশ ক্রুদ্ধ ও উদাসীন, […]

চোখ বিষয়ে

আমি তোমাদের কোন্‌ অনন্ত ছায়ায় শুয়ে আছি, শুয়ে রবো, আমি তোমাদের থেকে বহু দুরে তবু ছায়ার ভিতরে শুয়ে আছি, জেগে আছি, শিয়রে ও পায়ে ছায়া পড়ে, ছায়া কাঁপে, চোখের ছায়ায় মাছ খেলা করে, ভাসে, আমি তোমাদের মাছের মতন চোখ ছায়ার সাঁতারে তুলে আনি, তোমাদের গোলাপজামের মতো চোষ ভালোবাসি, মুখে দিই, দাঁতে ‘তোমাদের’ ভালোবাসাময় চোখগুলি ভেঙে […]

ক্লান্তির পর

আমি তোমার অধর থেকে ওষ্ঠ তুলে তাকিয়ে দেখি মুখের দিকে তুমি তোমার কোনো কথাই রাখেনি কথা ছিল কি এমন করে কান্না, এমন চোখের দুই পাশ মুচড়ে তাকানোর? কথা ছিল কি বিকেলবেলা ঘড়ির নিচে মায়ার খেলা আদর পেয়ে মার্জারীর মতো শরীর বাঁকানো? হাওয়ায় এখন নদীর মতো শব্দ ওঠে তিনটি কথা বলতে এসে তোমার ঠোঁটে চোখের মধ্যে […]

এবার কবিতা লিখে

এবার কবিতা লিখে আমি একটা রাজপ্রাসাদ বানাবো এবার কবিতা লিখে আমি চাই পনটিয়াক গাড়ি এবার কবিতা লিখে আমি ঠিক রাষ্ট্রপতি না হলেও ত্রিপাদ ভূমির জন্য রাখবো পা উঁচিয়ে- মেশপালকের গানে এ পৃথিবী বহুদিন ঋণী! কবিতা লিখেছি আমি চাই স্কচ, শাদা ঘোড়া, নির্ভেজাল ঘৃতে পক্ক মুরগী দু-ঠ্যাং শুধু, বাকি মাংস নয়- কবিতা লিখেছি তাই আমার সহস্র […]

আমি কিরকম ভাবে বেঁচে আছি

আমি কীরকম ভাবে বেঁচে আছি তুই এসে দেখে যা নিখিলেশ এই কী মানুষজন্ম? নাকি শেষ পরোহিত-কঙ্কালের পাশা খেলা! প্রতি সন্ধ্যেবেলা আমার বুকের মধ্যে হাওয়া ঘুরে ওঠে, হৃদয়কে অবহেলা করে রক্ত; আমি মানুষের পায়ের পায়ের কাছে কুকুর হয়ে বসে থাকি-তার ভেতরের কুকুরটাকে দেখবো বলে। আমি আক্রোশে হেসে উঠি না, আমি ছারপোকার পাশে ছারপোকা হয়ে হাঁটি, মশা […]

আমি ও কলকাতা

কলকাতা আমার বুকে বিষম পাথর হয়ে আছে আমি এর সর্বনাশ করে যাবো- আমি একে ফুসয়িয়ে নিয়ে যাবো হলদিয়া বন্দরে নারকোল নাডুর সঙ্গে সেঁকো বিষ মিশিয়ে খাওয়াবো- কলকাতা আমার বুকে বিষম পাথর হয়ে আছে। কলকাতা চাঁদের আলো জাল করে, চুম্বনে শিয়ালকাঁটা অথবা কাঁকর আজ মেশাতে শিখেছে, চোখের জলের মতো চায়ে তুমি চিনি দিতে ভুলে যাও এত […]

আমার খানিকটা দেরি হয়ে যায়

যে পান্থনিবাসে যাই দ্বার বন্ধ, বলে, “ঐ যে রুগ্ন ফুলগুলি বাগানে রয়েছে শুধু, এখন বসবেন?’ কেউ মুমূর্ষূ অঙ্গুলি আপন উরসে রেখে হেসে ওঠে, পাতা ঝরানো রহাসি, ‘এই অবেলায় কেন এসেছেন আপনি, কী আছে এখন? গত বসন্ত মেলায় সব ফুরিয়েছে, আর আলো নেই, দেখুন না তার ছিঁড়ে গেছে, সব ঘরে ধূলো, তালা খুলবে না এ জন্মে; […]

আমার কয়েকটি নিজস্ব শব্দ

পরিত্রাণ, তুমি শ্বেত, একটুও ধূসর নও, জোনাকির পিছনে বিদ্যুৎ, যেমন তোমার চিরকাল জোনাকির চিরকাল; স্বর্গ থেকে পতনের পর তোমার অসুখ হলে ভয় পাই, বহু রাত্রি জাগরণ- প্রাচীন মাটিতে তুমি শেষ উত্তরাধিকার। একাদশী পার হলে-তোমার নিশ্চিত পথ্য হবে। আমার সঙ্গম নয় কুয়াশায় সমুদ্র ও নদী; ঐ শব্দ চতুষ্পদ, দ্বিধঅ, কিছুটা উপরে, সার্থকতা যদি উদাসীন; বিপুল তীর্থের […]

অসুখের ছড়া

একলা ঘরে শুয়ে রইলে কারুর মুখ মনে পড়ে না মনে পড়ে না মনে পড়ে না মনে পড়ে না মনে পড়ে না চিঠি লিখবো কোথায়, কোন মুন্ডহীন নারীর কাছে? প্রতিশ্রুতি মনে পড়ে না চোখের আলো মনে পড়ে না ব্লেকের মতো জানলা খুলে মুখ দেখবো ঈশ্বরের? বৃষ্টি ছিল রৌদ্র ছায়ায়, বাতাস ছিল বিখ্যাত করমচার সবুজ ঝোপে পূর্বকালের […]

অপমান এবং নীরাকে উত্তর

সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে উঠলে, সাক্ষী রইলো বন্ধু তিনজন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে উঠলে, সাক্ষী রইলো বন্ধু তিনজন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে উঠলে, নীরা, কেন হেসে উঠলে, কেন সহসা ঘুমের মধ্যে যেন বজ্রপাত, যেন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে, নীরা, হেসে উঠলে, সাক্ষী রইলো বন্ধু তিনজন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে কেন হেসে কেন সাক্ষী কেন বন্ধু কেন তিনজন […]