মহারাজ, আমি তোমার

মহারাজ, আমি তোমার সেই পুরনো বালক ভৃত্য মহারাজ, মনে পড়ে না? তোমার বুকে হোঁচট পথে চাঁদের আলোয় মোট বয়েছি, বেতের মতো গান সয়েছি দু’হাত নিচে, পা শূন্যে- আমার সেই উদোম নৃত্য মহারাজ, মনে পড়ে না? মহারাজ, মনে পড়ে না? মহারাজ, চাঁদের আলোয়? মহারাজ, আমি তোমার চোখের জলে মাছ ধরেছি মাছ না মাছি কাঁকরগাছি একলা শুয়েও […]

প্রেমহীন

শেষ ভালোবাসা দিয়েছি তোমার পূর্বের মহিলাকে এখন হৃদয় শূন্য, যেমন রাত্রি রাজপথ ঝকমক করে কঠিন সড়ক, আলোয় সাজানো, প্রত্যেক বাঁকে বাঁকে প্রতীক্ষা আছে আঁধারে লুকানো তবু জানি চিরদিন এ-পথ্‌ থাকবে এমনি সাজানো, কেউ আসবে না, জনহীন, প্রেমহীন শেষ ভালোবাসা দিয়েছি তোমার পূর্বের মহিলাকে! রূপ দেখে ভুলি কী রূপের বান, তোমার রূপের তুলনা কে দেবে? এমন […]

প্রত্যেক তৃতীয় চিন্তা

মানুষের মতো চোখ, বিস্ফোরণ, সমাধির মতো শূন্যে প্রচ্ছন্ন কপাল পদচুম্বনের মতো ভালোবাসা ভিতরে রয়েছে ভালোবাসা তিনশো মাইল দূরে গিয়ে আলিঙ্গন করে দূর থেকে ভালোবাসা দেখে যেতে লোভ হয়, শরীর লুকোতে চায় জ্যোৎস্নালোকে, তবুও জ্যোৎস্নায় স্পষ্ঠ ছাড়া পড়ে এত স্পর্শকাতরতা। গোলাপের মতো এক ধানক্ষেত, পুরুষ নামের সব নদী বড় চেনা লাগে, দুঃখে কোনো পাপ নেই- যত […]

পাপ ও দুঃখের কথা ছাড়া আর কিছুই থাকে না

পাপ ও দুঃখের কথা ছাড়া আর কিছুই থাকে না আয়না ভেঙে বিচ্ছুরণ একদিন বিস্ফোরণ হয় বুক ভেঙে কান্না এলে কান্নাগুলি ছুটে যায় ধূসর অন্তিমে স্বর্গের অলিন্দে- স্বর্গ থেকে তারপর ঢলে পড়ে মহিম হালদার স্ট্রীটে প্রাচীন গহ্বরে মধ্যরাতে। জানলা ভেঙে বৃষ্টি এলে বুকে যে-রকম পাপ হয় যে-রকম স্মৃতিহীন মহিম হালদার কিংবা আমি ও মোহিনী পুরুষের ভাগ্য […]

নীরার জন্য কবিতার ভূমিকা

এই কবিতার জন্য আর কেউ নেই, শুধু তুমি, নীরা এ-কবিতা মধ্যরাত্রে তোমার নিভৃত মুখ লক্ষ্য করে ঘুমের ভিতরে তুমি আচমকা জেগে উঠে টিপয়ের থেকে জল খেতে গিয়ে জিভ কামড়ে একমুহূর্ত ভাবলে কে তোমার কথা মনে করছে এত রাত্রে–তখন আমার এই কবিতার প্রতিটি লাইন শব্দ অক্ষর কম ড্যাস রেফ্‌ ও রয়ের ফুট্‌কি সমেত ছুটে যাচ্ছে তোমার […]

নীরা তোমার কাছে

সিঁড়ির মুখে কারা অমন শান্তভাবে কথা বললো? বেরিয়ে গেল দরজা ভেজিয়ে, তবু তুমি দাঁড়িয়ে রইলে সিঁড়িতে রেলিং-এ দুই হাত ও থুত্‌নি, তোমায় দেখে বলবে না কেউ থির বিজুরি তোমার রঙ একটু ময়লা, পদ্মপাতার থেকে যেন একটু চুরি, দাঁড়িয়ে রইলে নীরা, তোমায় দেখে হঠাৎ নীরার কথা মনে পড়লো। নীরা, তোমায় দেখি আমি সারা বছর মাত্র দু’দিন […]

নীরা ও জীরো আওয়ার

এখন অসুখ নেই, এখন অসুখ থেকে সেরে উঠে পরবর্তী অসুখের জন্য বসে থাকা। এখন মাথার কাছে জানলা নেই, বুক ভরা দুই জানলা, শুধু শুকনো চোখ দেয়ালে বিশ্রাম করে, কপালে জলপট্টির মতো ঠাণ্ডা হাত দূরে সরে গেছে, আজ এই বিষম সকালবেলা আমার উত্থান নেই, আমি শুয়ে থাকি, সাড়ে দশটা বেজে যায়। প্রবন্ধ ও রম্যরচনা, অনুবাদ, পাঁচ […]

নির্বাসন

আমি ও নিখিলেশ, অর্থাৎ নিখিলেশ ও আমি, অর্থাৎ আমরা চারজন একসঙ্গে সন্ধেবেলা কার্জন পার্কের মধ্য দিয়ে,- চতুর্দিকে রাজকুমারীর মত আলো- হেঁটে যাই, ইনসিওরেন্স কোম্পানীর ঘড়ি ভয় দেখালো উল্টো দিকে কাঁটা ঘুরে, আমাদের ঘাড় হেট করা মূর্তি, আমরা চারজন হেটে যাই, মুখে সিগারেট বদল হয়, আমরা কথা বলি না, রেড রোডের দু’পাশের রঙিন ফুলবাগান থেকে নানা […]

দেখা হবে

ভ্রূ-পল্লবে ডাক দিলে, দেখা হবে চন্দনের বনে- সগন্ধের সঙ্গে পাবো, দ্বিপ্রহরে বিজন ছায়ায় আহা, কি শীতল স্পর্শ হৃদয়-ললাটে, আহা, চন্দন চন্দন দৃষ্টিতে কি শান্তি দিলে, চন্দন, চন্দন আমি বসে থাকবো দীর্ঘ নিরালায় প্রথম যৌবনে আমি অনেক ঘুরেছি অন্ধ, শিমূলে জরুলে লক্ষ লক্ষ মহাদ্রুম, শিরা-উপশিরা নিয়ে জীবনের কত বিজ্ঞাপন তবুও জীবন জ্বলে, সমস্ত অরণ্য-দেশ জ্বলে ওঠে […]

জ্বলন্ত জিরাফ

শেষ কবে নারীহত্যা করেছি আমার ব্যক্তিগত স্বর্গে? বাথরুমে- ছ’মাস আগে, সেই থেকে চোখে ভালো দেখতে পাই না। সাতদিন পর্যন্ত আয়নায় হাসির প্রমাণ লেগেছিল- এছাড়া চোষের জল জমিয়ে রেখেছিলাম বেসিনে। সেই ঠান্ডা চোখের জলে রোজ মুখ ধুতাম ও কুলকুচোঁ করেছি জানালা দিয়ে। প্রতিবেশী এসে বিরাট আপত্তি জানালোঃ এতদিন পেচ্ছাপ করা সহ্য করেছি, তা বলে কি কুলকুচো […]