তোমার হাত যে ধরেইছিলাম তাই পারিনি জানতে এই দেশে বসতি করে শান্তি শান্তি শান্তি তোমার হাত যে ধরেইছিলাম তাই পারিনি জানতে সফলতার দীর্ঘ সিঁড়ি, তার নিচে ভুল-ভ্রান্তি কিছুই জানতে পারিনি আজ, কাল যা-কিছু আনতে তার মাঝে কি থাকতো মিশে সেই আমাদের ক্লান্তির দু-জন দু-হাত জড়িয়ে থাকা–সেই আমাদের শান্তি? তোমার হাত যে ধরেইছিলাম তাই পারিনি জানতে। […]
তোমার হাত
আমাকে ছেড়ে যাবার পর
আমাকে ছেড়ে যাবার পর শুনেছি তুমি খুব কষ্টে আছো। তোমার খবরের জন্যে যে আমি খুব ব্যাকুল এমনটি নয়। তবে ঢাকা খুবই ছোট্ট শহর, কারো কষ্টের কথা এখানে চাপা থাকে না। শুনেছি আমাকে ছেড়ে যাবার পর তুমি খুবই কষ্টে আছো। প্রত্যেক রাতে সেই ঘটনার পর নাকি আমাকে মনে পড়ে তোমার। পড়বেই তো, পৃথিবীতে সেই ঘটনা তুমি […]
সেই সব স্বপ্ন
কারাগারের ভিতরে পড়েছিল জোছনা বাইরে হাওয়া, বিষম হাওয়া সেই হাওয়ায় নশ্বরতার গন্ধ তবু ফাঁসির আগে দীনেশ গুপ্ত চিঠি লিখেছিল তার বৌদিকে, “আমি অমর, আমাকে মারিবার সাধ্য কাহারও নাই।” মধ্যরাত্রির আর বেশি দেরি নেই প্রহরের ঘণ্টা বাজে, সান্ত্রীও ক্লান্ত হয় শিয়রের কাছে এসে মৃত্যুও বিমর্ষ বোধ করে। কনডেমড সেলে বসে প্রদ্যুত ভট্টাচার্য লিখছেন, “মা, তোমার প্রদ্যুত […]
রাষ্ট্রপ্রধান কি মেনে নেবেন?
চেয়ার, টেবিল, সোফাসেট, আলমারিগুলো আমার নয় গাছ, পুকুর, জল, বৃষ্টিধারা শুধু আমার চুল, চিবুক, স্তন, ঊরু আমার নয়, প্রেমিকের ব্যাকুল অবয়বগুলো আমার রাষ্ট্রপ্রধান কি মেনে নেবেন আমার প্রস্তাবগুলো কবিতার লাবণ্য দিয়ে নিজস্ব প্রাধান্য বিস্তার অন্তিমে উদ্দেশ্য যার? কুচকাওয়াজ, কামান কিম্বা সামরিক সালাম নয় বাগানগুলো শুধু আমার মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, আন্তর্জাতিক সাহায্য তহবিল নয় মিল-অমিলের স্বরবর্ণগুলো শুধু […]
হে হিরণ্ময়
ভয়ে ভয়ে সারাদিন কেটে যায় ; এমন কি ইদানীং উপবিষ্ট হতে ভয় লাগে, কেননা তেমন অনুগত, বিশ্বস্ত চেয়ার আর কখনো দেখি না কারো করতলগত হ’য়ে পোষ-মানা বাঘের মতন ব’সে আছে, তেমনি নির্ভরযোগ্য টুল — কিম্বা বেঞ্চি নেই যেখানে আমার পাঁচ ফুট ন ই’ইঞ্চি শরীর খুব সাবলীলভাবে দু’দণ্ড জিরোবে, এমন আসন পাবে যার পাশে অন্তত থাকতে […]
স্মৃতি : কৈশোরিক
অদৃশ্য ফিতে থেকে ঝুলছে রঙিন বেলুন রাত্রির নীলাভ আসঙ্গে আর স্বপ্নের ওপর যেন তার নৌকা- দোলা; সোনার ঘণ্টার ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ছে সমস্ত শহরের! আমি ফিরলাম ঝর্ণার মতো সেই গ্রীষ্ম দিনগুলোর ভেতর যেখানে শীৎকার, মত্ততা আর বেলফুলে গাঁথা জন্মরাত্রির উৎসবের আলো; দীর্ঘ দুপুর ভরে অপেমান ঘোড়ার ভৌতিক পিঠের মতো রাস্তাগুলো, গলা পিচে তরল বুদ্বুদে ছলছল নত্ররাজি, […]
নীল জলের রান্না
কিছু লাল মোটা চাল ছুঁড়ে মারলে মুখে ‘যা, রেশনের দোকানে লাইন দে গে যা।’ হ্যাঁ, যাবোই তো। আমার কার্ডের যা প্রাপ্য আমি তা নিয়েই ফিরবো, তা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু এখনও যেহেতু তৈরি হয় নি চিহ্নপত্র আমি তাই জানিও না কতোটা বাতাস আছে আমার ভাগে, কয় সের চিনির মতো শুভ্র তারার ফেনা, সমুদ্রের নীল জল […]
যাত্রা
জলের দিকে জল ভেসে যায় হাওয়ার দিকে হাওয়া তাকিয়ে থাকি, চোখ চলে না সমুদ্দুরের পারে, একা-একা একলা অন্ধকারে আমার আছে কেবল নৌকো বাওয়া। যাচ্ছি কোথায়, কেউ জানে না, পাগলা হাওয়া বাধ মানে না, রাতের কালো জলের কাছে আমার কথা ছিল একটু থামার। থেমেও ছিলাম, কেউ ডাকেনি দুয়ার খুলে কেউ রাখেনি। অশেষ জলে আশাও যে নেই […]
জ্যোৎস্না রাতে, জ্যোৎস্নার ভিতরে
জ্যোৎস্নারাতে, জ্যোৎস্নার ভিতরে তুমি শুয়ে আছো— লাবণ্য ঝরিছে অপরুপ ; এরকম চন্দ্রের ক্রন্দন দেখেছে বাংলাদেশ । মানুষের ভিতরে এক চাঁদরানী আছেন, অতিব্যক্তিগত নাচায় তারে আমৃত্যু-শোণিতে-জোয়ারে ; সুস্থচিত্রকল্প, রোমাঞ্চ! তোমার ভিতরে এক তৃষ্ণা ছিলেন, অন্ধকারের মতো কুটিল জটিলা নদীর মতো বহুব্রীহি, সার্থক ; সেখানে দীক্ষা নেয় জলের প্রাণীরা, গভীরতা কতদূর জানে না মাছরাঙা— শ্মশানে পুড়ছে কাঠ, […]
ভ্রূণ
যে একটি ভ্রূণ নষ্ট করতে পারে সে ইচ্ছে করলেই একঝাঁক তুলতুলে শিশুকে কুয়োর কাছে ডেকে এনে আচমকা ধাক্কা দিতে পারে। যে একটি ভ্রূণ নষ্ট করতে পারে সে বাগানের সমস্ত গোলাপ গাছ উপড়ে ফেলতে পারে স্নানের পুকুরে নামাতে পারে অসংখ্য হাঙর। যে একটি ভ্রূণ নষ্ট করতে পারে বিশাল জনসভায় সে শখ করে ছেড়ে দিতে পারে একলক্ষ […]