ছেলেবেলায় পাড়ার ছোটরা মিলে, রোয়াকে বসে একরাশ বেলুন নিয়ে ফোলাবার চেষ্টা করতাম আচ্ছা আপনারাই বলুন বেলুন, ফোলানো কি সহজ কাজ ? কোনোটা আবার এমন নরম, যে ফুলাতে না ফুলাতে ফটাস করে যেত ফেটে আবার কোনোটা এমন শক্ত, যে ফু দিতে দিতে চোয়াল হয়ে যেত ব্যথা। তাই একদিন সবাই মিলে ঠিক করলাম পাড়ার এক দাদাকে ধরে […]
লিখেছেন: পি সি সরকার
১৯১৩ সালে পিতা ভগবান চন্দ্র সরকার এবং মাতা কুসুম কামিনী দেবীর পুত্র প্রতুল চন্দ্র ২৩শে ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহন করেন টাঙ্গাইলের অশোক পুর নামে ছোট্ট একটা গ্রামের কুঁড়ে ঘরে। প্রচন্ড দারিদ্রের মধ্যে কাটে তার শৈশব।
সামাজিক ভাবে ম্যাজিক তখন ডাইনি বিদ্যার দুর্নামে দুষ্ট থাকায় প্রতুল চন্দ্রের পিতা বংশানুক্রমে ম্যাজিক শিক্ষা গ্রহন করলেও সামাজিক অপবাদের ভয় কখনো প্রকাশ্যে ম্যাজিক খেলা দেখাননি।প্রতুল চন্দ্র ম্যাজিক সম্পর্কে আগ্রহি হয়েছিলেন রক্তের টানে। কিন্তু এই অনিন্দ সুন্দর ভারতীয় বিদ্যাকে কুসংস্কারের আস্তরনে আচ্ছন্ন রাখার সামাজিক প্রতিবন্ধকতা তিনি মেনে নিতে পারেননি। ম্যাজিক বিষয়টিকে ভুতবাজি, ঠক, মাদারি,ভন্ড তান্ত্রিকদের হাত থেকে মুক্ত করে ,নিয়ে এলেন বিশ্ব সভ্যতার আঙিনায়।
বিশ্বের তাঁবর বড় বড় যাদু শিল্পীদের সাথে একই মঞ্চে প্রদর্শন করলেন ভারতীয় জাদু, যা মূলত বৌদ্ধ তন্ত্র ও হিন্দু তন্ত্রের দশ মহাবিদ্যার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অনাদরে পরে ছিলো। পথে পথে ঘুরে বেড়াত মাদারির ঝোলাতে।
অন্ধকার কুসংস্কারে আচ্ছন্ন সেই যাদুবিজ্ঞানকে ঘোষে মেজে প্রতুল চন্দ্র নিয়ে এলেন বিশ্বের জনমঞ্চে। আমেরিকা,ইংল্যান্ড,জার্মানির দর্শক অপলক ও অবলোকন করলো ভারতীয় যাদুকরের ইন্দ্রজাল।
দর্শকের ভালোবাসায় প্রতুল চন্দ্র সরকার পেলেন জাদু সম্রাট উপাধি। মৃত্যুর এতো বছর পরেও যিনি সমান জনপ্রিয়। যারা তার ম্যাজিক দেখেছেন বা যারা দেখেননি সবার কাছে আজও সমান আগ্রহের।