চল্লিশ বছর আগে এই জায়গা কেমন ছিল, এটা আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না। এই কথা বলে সেলিম এমনভাবে শোয়েবের দিকে তাকাল, যেন সে খুবই উল্লেখযোগ্য একটা কথা বলেছে। শোয়েব বলল- চল্লিশ বছর আগে আমার জন্ম হয় নাই। সেলিম বিজয়ীর মতো হাসল- তাইলে, তাইলে বুঝবেন না। আপনি আছেন না? কী? আপনি আছেন। আপনি বুঝিয়ে দেবেন। আরে, […]
লিখেছেন: মঈনুল আহসান সাবের
মঈনুল আহসান সাবের (জন্ম ২৬ মে ১৯৫৮) একজন বাংলাদেশী সাহিত্যিক। তাঁর পিতা কবি আহসান হাবীব। জন্মস্থান ঢাকা।
শিক্ষা:
মাধ্যমিক: ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা (১৯৭৩) উচ্চ মাধ্যমিক: ঢাকা কলেজ (১৯৭৫) স্নাতক সম্মান (সমাজবিজ্ঞান): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৮) স্নাতকোত্তর (সমাজবিজ্ঞান): ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৯)
পেশা:
কার্যনির্বাহী সম্পাদক: সাপ্তাহিক ২০০০, লেখালেখি।
পুরস্কার:
বাপী শাহরিয়ার শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১), ফিলিপস পুরস্কার, হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৬)
প্রকাশিত গ্রন্থ:
পরাস্ত সহিস (১৯৮২), অরক্ষিত জনপদ (১৯৮৩), স্বপ্নযাত্রা (১৯৮৪), আগমন সংবাদ (১৯৮৪), মামুলী ব্যাপার (১৯৮৪), চারদিক খোলা (১৯৮৫), একবার ফেরাও (১৯৮৫), আদমের জন্য অপেক্ষা (১৯৮৬), আগামী দিনের গল্প (১৯৮৭), পাথর সময় (১৯৮৯), এসব কিছুই না (১৯৮৯), লাল বাড়ির অদ্ভুত ভূত (১৯৮৯), ভিড়ের মানুষ (১৯৯০), এরকমই (১৯৯০), কেউ জানে না (১৯৯০), কোনো একদিন (১৯৯০), মানুষ যেখানে যায় না (১৯৯০), এক রাত (১৯৯০), চার তরুণ-তরুণী (১৯৯০), কয়েকজন অপরাধী (১৯৯০), পরাজয় (১৯৯০), লিলিপুটরা বড় হবে (১৯৯০), বাংলাদেশের ফুটবল তারকা (১৯৯০), সীমাবদ্ধ (১৯৯১), অচেনা জায়গায় (১৯৯১), কয়েকটি প্রেমপত্র (১৯৯১), সতের বছর পর (১৯৯১), এ এক জীবন (১৯৯১), অপরাজিতা (১৯৯১), ফেরা হয় না (১৯৯১), অগ্নিগিরি (১৯৯১), ধারাবাহিক কাহিনী (১৯৯২), অপেক্ষা (১৯৯২), কবেজ লেঠেল (১৯৯২), হারানো স্বপ্ন (১৯৯২), দুই বোন (১৯৯২), নীল খাম (১৯৯২), না (১৯৯২), সে তোমাকে পাবে না (১৯৯২), মুন্নী (১৯৯২), লজ্জা (১৯৯২), ভূতের থাকা না থাকা (১৯৯২), সুদূর (১৯৯৩), প্রেম ও প্রতিশোধ (১৯৯৩), স্বজন (১৯৯৩), তুমি আমাকে নিয়ে যাবে (১৯৯৩), মঈনুল আহসান সাবেরের প্রেমের গল্প (১৯৯৩), এক ঝলক আলো (১৯৯৪), দুপুর বেলা (১৯৯৫), মৌমাছি ও কাঠুরিয়া (১৯৯৬), তিন সাংবাদিক ভূত (১৯৯৭), মুক্তিযোগ্দধা আব্দুল মালেকের হাসি (১৯৯৭), সংসার যাপন (১৯৯৭), মৃদু নীল আলো (১৯৯৭), রেলস্টেশনে অজানা গল্প (১৯৯৮), জ্যোতির্ময়ী, তোমাকে বলি (১৯৯৮), যোগাযোগ (১৯৯৮), নির্বাচিত প্রেমের উপন্যাস (১৯৯৯), ঠাট্টা (১৯৯৯), অবসাদ ও আড়মোড়ার গল্প (১৯৯৯), ফিরে আসা (১৯৯৯), নির্বাচিত গল্প (১৯৯৯), ব্যক্তিগত (২০০০), বৃষ্টির দিন (২০০০), খুনের আগে ও পরে (২০০০), সবচেয়ে সুন্দর (২০০০), এটা আমার একার গল্প (২০০১), কেউ একত্রে অপেক্ষা করছে (২০০১), উপন্যাসসমগ্র (২০০১), কিশোর সমগ্র (২০০৩), ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (২০০৩), আমাদের খনজনপুর (২০০৪), পরের ঘটনা (২০০৪), শরীরের গল্প (২০০৪), যে কেউ না, তার সঙ্গে (২০০৫), সুকুমারের লজ্জা (২০০৫), তিলকের গল্প (২০০৬), দূরের ঐ পাহাড়চূড়ায় (২০০৬), এই দেখা যায় বাংলাদেশ (২০০৬), ঋষি ও নারী (২০০৫)।
লেখা নিয়ে নির্মিত নাটক:
পাথর সময়, না প্রভৃতি
নির্মিত চলচ্চিত্র:
লিলিপুটেরা বড় হবে
আমি ধর্মবিশ্বাসী নই। এটি আমার আত্মীয়স্বজন, কাছের বন্ধুবান্ধব জানেন। আর কেউ জানেন না। কারণ আমার কাছে এটা জানান দেওয়ার ব্যাপার না। আমি আস্তিক নাস্তিক এই ব্যাপারগুলো নিয়ে ব্যস্তও নই। কখনো মনে করি না, নাস্তিকতা "প্রগতিশীলতার " অংশ হিসাবে ঘোষণা দেওয়ার মতো কিছু। যারা ঘোষণা দিয়ে নাস্তিক, যুক্তি নিশ্চয়ই তাদেরও মজুদ আছে।
আমি আস্তিক নাস্তিক, এরকম সরল বিভাজনের ভেতরেও নেই। ধর্মের বিশ্বাস বা দর্শনগত দিকটি আমার কাছে প্রয়োজনীয় নয়। অস্বীকার করি না, পাশাপাশি, ধর্মের যে আচারিক, সাংস্কৃতিক ও দাপ্তরিক দিক আছে, তা আমাকে কমবেশি মেনে চলতে হয়।
ধর্ম নিয়ে বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলার জন্য, ধর্মের সমালোচনার জন্য, ধর্ম ও এর পয়গম্বরকে গালিগালাজ করার জন্য এবং মূলত ইসলাম ধর্মের বিনাশ বা ধংস চাওয়ার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন খুন ও আক্রান্ত হয়েছেন। হ্যাঁ, আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।
পাশাপাশি কিছু প্রশ্ন আমি এড়িয়েও যেতে পারি না। আমরা আসলে কী চাই? ধর্ম বা ইসলামহীন সমাজ? মোহাম্মদকে বেজন্মা বলে গালি দিয়ে সেটি কায়েম সম্ভব? আবার আমরা শুধু গালিই দেব, কিন্তু চাপাতির সংখ্যা দিনদিন কেন এত বাড়ছে, এটা বোঝার চেষ্টা করব না, এটাই বা আমাদের কী দেবে?
অনেককেই বলতে শুনি, সমালোচনার জবাব খুন হতে পারে না। আমি আরেকটু এগিয়ে বলি, যে গালি বিশ্বাসিদের বুক ভেদ করে দেবে, তার জবাবও খুন হতে পারে না। কিন্তু মুসলমানদের অবস্থাটা, বিশ্বজুড়ে, কখনো কি বোঝার চেষ্টা করব, আমরা? পৃথিবীর কোনো আদিবাসীও হয়তো এতটা অস্তিত্ব সংকটে নেই, যতটা আছে মুসলমানরা। পুঁজি চায় প্রতিপক্ষ। এ মুহূর্তে মুসলমান ছাড়া আর কে হতে পারে প্রতিপক্ষ! মনে রাখুন, এখানে ধর্মের কোনো ব্যাপার নেই, ব্যাপার যা আছে, তা পুঁজিবাজার নিশ্চিত করার ও বৃদ্ধির।
মুসলমান ক্রমশ কোনঠাসা হচ্ছে, ক্রমশ উন্মত্ত হচ্ছে। আপনি এর কাছে যুক্তি আশা করছেন আপনার কোন বিবেচনায়?
আমাদের এখানে যে ঘটনাগুলো ঘটছেে, আমরা বলে দিচ্ছি তারা মাদ্রাসার ছাত্র, বলে দিচ্ছি তারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর, অনুন্নত, বর্বর। এসব বলার পর আপনি আবার আশা করছেন, এই বর্বর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যে কোনো সমালোচনা সহজভাবে নেবে, চিন্তার খোরাক হিসাবে নেবে!
পুঁজির বাইরে ঘটনা ঘটে না। আমাদের এখানেও ওরা টিকে থাকে পুঁজিবাজার সচল রাখার প্রয়োজনেই। ধর্ম বোঝার আর মুখ খোলার আগে, সম্ভব হলে, আরো কিছু প্রাসঙ্গিক ব্যাপার বুঝে নিন। লাভ আমার আপনার, সবার।