কুকুরীর জন্য সংবেদনা
আঘাতে আঘাতে মানুষ দস্যু হয়ে যায় ।
চিতই পিঠার মতো জালি জালি কলিজায়
রক্ত ফিনকি দিয়ে উঠে তার ।
বুকের গহীনে অদৃশ্য চুলোয় স্বপ্নরে পুড়ে দেয়
যে স্বৈর দহন,
তারই বিধ্বস্ত পাড়ে পড়ে থাকে
একাকী জ্বলন্ত অঙ্গার মানুষ ।
অতঃপর আবুল কালাম
আরেক উদ্বাহু স্বপ্নের কোলে ঘুমাতে চায় ।
ঔরসের রক্তের মতো যে ছিল আপন,
জান্তব পুরুষের টানে ছেড়ে গেছে বহুদিন ।
খান খান হৃদয়ের পাতে অশোধিত ঋণ কিছু রেখে গেছে সে ।
ঐন্দ্রজালিক সময়কে যে মানে বান্ধব
উতরোল কান্নায় কে ফেরাবে তারে ?
তবুও তো মনিবের আড়ালে গেলে নিরীহ পশু
কর্কশ চিৎকারে মমতার স্বকীয় চিহ্ন রাখে ;
প্রেমের গলিত লালার উপর অমিয় সৌরভ রেখে
মানুষ মানুষকে ছেড়ে যায় দ্ব্যর্থহীন ।
তবুও আশা থাকে…
বেদনার বিমূর্ত কফিনে লা-ওয়ারিশ কুকুরীর মতো
নির্বেদের আঙিনায় যদি সে ফেরে ।
আবুল কালাম !
মানুষের কলিজা নিয়ে ধাপ্পা খেলে যে নিষ্ঠুর,
অন্তহীন অঙ্কের অকূলপাথার নিয়ে
উদ্ধত যৌবনে তারও পড়ন্ত বিকেল নামে ।
প্রেমের বিনয়ী জল হাতে পরিপুর্ণ মাটির বাসন–
অপেক্ষা করে সে ।
প্রাণেড় কুকুরী, আহা, আপন মানুষ
যদি ফিরে আসে…
ফেরার ইচ্ছে
নদীকে নিজের বাড়ি মনে করো,
তখন ভাবতে হবে না যে তুমিও ভাসছো
স্রোতের সমান ।
যদিও আবাস তার–পৃথিবীর নিরত ঘূর্ণন
বুঝতে পারে না কেউ । তাই তো অটল থাকে
বিবর্ণ বিষাদে
সফল ক্ষমায় ।
দারুণ প্রলম্ব হোক তোমার সময়
দ্রৌপদীর বস্ত্র খুব যেমন লম্বাটে ।
পরত খুলতে গিয়ে তোমার অনেক
হরণের হাত ফিরে ফিরে যাবে ।
তখন
ছলনার দিন-ক্ষণ
তোমার মুঠোয়
কেমন পবিত্র হয়, দেখো ।
অসীম শাড়িতে জলো নাম, প্রেম
যে যত টানতে পারে কাছে
তার তত বিরহ-বিচ্ছেদ
গান গায় বুকের মন্দ্রিত পাখি
চ্ছলাৎ… চ্ছলাৎ…
প্রবাস সুদীর্ঘ হলে স্মৃতি শুধু খাটো হয়ে যায়;
অচল মুদ্রাও তুলে রাখে কেউ ইতিহাস
মূল্য দেবে বলে ।
তুমিও তেমন মুখ । কবির মনের মধ্যে বিভূঁইবিলাস ।
জলের সতীত্বে ভেসে গেলে
নদীকে বাড়ির মতো স্বচ্ছ রেখো ।
আসবো নাগর এই দুধভাত । থালায় গন্তব্য রেখে
অগ্রিম বীণার তারে সুর দেবো কেন ?
ঝড়ে বক মরে । হৃদয় মরে না ।
লবণ প্রার্থনার দিনলিপি
বাগান সংগুপ্ত রেখে
তুমি কেন পাথর ভালোবাসো ?
দেয়ালে শ্যাওলা জমে
কাঠামো গুঁড়িয়ে দিলে ধুলো জমে
প্রত্ন-প্রবেশিকায়
অতীত মোহিত করে তুমি কেন
পিছনে হাঁটো ?
তালগাছ নীরবে বাড়ে । ঝড়েও লুটিয়ে পড়ে না ।
তোমাকে পাহাড় দিলাম । মৌনতায় উঠে আসো ।
পুলক ছড়িয়ে দিলে
সঙ্গে কিছু বিষাদের দায় থেকে যায়
ঢেউয়ে ঢেউয়ে জীবন মিলিয়ে দেখো
সমুদ্র কখনো লিখবে না লবণ প্রার্থনার দিনলিপি ।
বিষাদ তাড়িত হলে তুমি কেন আকাঙ্ক্ষা মাড়াও ?
অপূরণের দাবানলে
মানুষ কেবলি ছাই হতে চায়, সোনা নয় ।
হৃদয়ে আকাশ গুঁজে রাখো
মেঘে মেঘে স্বপ্ন খুঁজে পাবে ।
মৃত্যুকে প্রেমের জন্য উপাত্ত ভেবো না
তোমাকে শোনাবো লুপ্ত পাথরের গান
“তবুও তো মনিবের আড়ালে গেলে নিরীহ পশু
কর্কশ চিৎকারে মমতার স্বকীয় চিহ্ন রাখে ;
প্রেমের গলিত লালার উপর অমিয় সৌরভ রেখে
মানুষ মানুষকে ছেড়ে যায় দ্ব্যর্থহীন ।”……..KOBITAGULU VALO LEGECHE.