অনেক দিন আগে থেকে একটা বাড়ির স্বপ্ন আমার মাথায় ডুকে গেছে।সেই বাড়িটা কিভাবে মাথায় এলো খুঁজে পাই না ।
মাঝে মাঝে ভাবি ‘শেষের কবিতা’ থেকে আবার মনে হয় ‘মাধুকরী’ বা ‘একটু উষ্ণতার জন্য’।যেখান থেকেই হোক না বাড়িটার কথা কাউকে বলা হয়নি ।মনের ভিতরে সযতনে রেখেছিলাম ।
গভীর অরন্যের মধ্যে সেই চারপাশে পাঁচিল দেওয়া সাদা রঙের একতলা পাকা বাড়ি,বাড়ির বাইরের দেয়ালে কোথাও কোথাও সবুজ শেওলা
জমেছে।চারপাশে বিশাল এলাকা জুড়ে ঘাস আর কয়েকটা বড় শতবর্ষী আম বা শিরিষ গাছ। বাড়ির দক্ষিন দিকে একটা খোলা বারান্দা। পাচিলের পাশে কোথাও গোলাপ ,টিউলিপ,কোথাও ডালিয়া ফুটেছে ।সদর গেটের সাথে মর্নিং গ্লোরি লতানো ফুল গুলো দেয়ালের অনেকটা দখল করে আছে । আবার কোথাও কিছু সবজী যেমন শসা টমেটো । পাশের বাড়ি থেকে আমার বাড়ির দুরুত্ব হবে কমপক্ষে দুই কিলোমিটার। রাতে তো নয়ই দিনেও থাকবে শুনসান নিরবতা ।
একটা বড় ড্রয়িং রুম আর ছোট দুটি বেডরুম। ড্রয়িং রুমে থাকবে রাজ্যের বই আর একটা রেকড প্লেয়ার। একটা ফায়ার প্লেস।
গভীর অরন্যে সে বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকবে অবশ্যই সোলার পাওয়ারের । একাই থাকবো । একজন কেয়ার টেকার থাকলে মন্দ না ।একটা ‘গোল্ডেন রেড লিভার’ বা জাপানী ‘শিবা’ প্রজাতির কুকুর ।একটা ছোট জিপ থাকলেই ভালো সপ্তাহে একদিন পাঁচ কিলোমিটার দুরের বাজারে যেতে হবে তাই।
সারাটা দিন কাটবে দক্ষিনের বারান্দায় বসে । রেকড প্লেয়ার থেকে ভেসে আসবে সাগর সেন বা জয়তী চক্রবর্তীর কন্ঠের রবীন্দ্র সঙ্গীত । জোসনা রাতেও সেই বারান্দায় একটা ইজি চেয়ারে বসে চোখ বুঝে গান শুনেই কাটবে।
ইচ্ছে হলে তুমি চলেও আসতে পারো দু’একদিনের জন্য অবশ্য তোমার স্বামী রত্নটি যদি অনুমতি দেন ।উনাকেও নিয়ে আসতে পারো ,আমার দিক থেকে কোন আপত্তি নেই ।তবে আমার সাহচার্য্য উনার উপভোগ্য নাও হতে পারে । শর্ত একটাই দু রাতের বেশী থাকা চলবে না । দু’রাত থেকে তিন রাত হলে অতিথি আর অতিথি থাকে না। তুমি আসলেই শুধু রাতে ‘বার বি কিউ’ হবে । একা একা তো আর ‘বার বি কিউ ‘ চলে না ।তোমার পছন্দের গান আর কিছু বই নিয়ে আসতে ভুলো না কিন্তু ।
…।(অসমাপ্ত)