যখন মুক্তিযুদ্ব শুরু হয় তখন আমি চার ,যখন শেষ হয় তখন আমার পাঁচ চলছে ।ছেলেবেলার একটা কথা আমার খুব মনে পড়ে আমি এখনো বুঝতে পারি না আসলে কি তা ঘটেছিল নাকি শুনতে শুনতে সে ভাবে নিজের মধ্যে গল্প হয়ে গেছে ?
গল্পটা হচ্ছে -রাজাকার আসল বলে আমারা বাচ্চারা ধানের ক্ষেতে লুকিয়ে থাকতাম ।
আমি যে স্কুলে মাধ্যমিক স্তরে পড়াশুনা করেছিলাম সে স্কুলে সে সময় কোন শহীদ মিনার বা স্মৃতিসৌধ ছিল না ,কেন জানি না ।
মুক্তিযুদ্ব সম্পর্কে অনেক লেখা পড়া হয়েছে । যে দুটি বই আমার মনে দাগ কেটেছে তার একটি জাহানারা ইমামের “একাত্তুরের দিনগুলি ” ।পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো আমি যেন কোন উপন্যাস পড়ছি অথচ তা ছিলো একটি পরিবারের মুক্তিযুদ্ব । যেখানে গল্প আছে জীবনের ,পরিবারের, একজন মায়ের ,একজন স্বামীর । কি অসাধারন লিখেছেন নিজের একান্ত প্রিয় মানুষের বিয়োগ বেদনা ।একটি পরিবারের মধ্যেই যেন সমস্ত মুক্তিযুদ্ব । “রুমি ” তোমাকে মনে পড়ে ।
অন্য লেখাটি রফিকুল ইসলামের “লক্ষ প্রানের বিনিময়ে ” । একজন মুক্তিযোদ্বা হিসাবে এই লেখাটি ঐতিহাসিক মুল্য অপরিসীম । খালেদ মোশারফ সম্পর্কে এ বইয়ে যে জেনেছি সেভাবে আর কোথাও পড়া হয় নি ।আমরা অনেক কিছুই জানি না এতো বড় একজন মুক্তিযোদ্বা সম্পর্কে যেমন জানি মেজর জিয়া সম্পর্কে ,হয়তো রাজনীতিক কারনেই । এরকম অনেক অকথিত ইতিহাস শুধু রাজনৈতিক কারনেই বিতর্কিত করা হচ্ছে । এ কে খন্দকার এর লেখা “১৯৭১ ভেতরে বাইরে” বইয়ের কিছু বিষয় আওয়ামী লীগের পছন্দ হয় নি সে কথা গুলো অল্প কিছু হলেও তার উল্লেখ আছে “লক্ষ প্রানের বিনিময়ে ” তে ।
যারা যুদ্ব করেছেন,যুদ্ব দেখেছেন তাঁদের কাছে অনেক দায় আছে ।সঠিক ইতিহাস লিখে যাওয়ার । তিনি যা দেখেছেন অথবা করেছেন । একটা জাতির জন্য এ খুব প্রয়োজন । স্বাধীনতার একহাজার বছর পর যখন সে সম্পর্কে কেউ জানতে চাইবে তা যেন শুধু কোন দল বা ব্যক্তিতে সীমাবদ্ব না থাকে তারই জন্য ।
যখন যুদ্ব শুরু হয় তখন সবাই যুদ্বে যায় না । কেউ কেউ যুদ্বটাকে দেখেও ,ডক্টর জিভাগোর মতো !