ভয়ে ভয়ে সারাদিন কেটে যায় ; এমন কি ইদানীং
উপবিষ্ট হতে ভয় লাগে, কেননা তেমন অনুগত,
বিশ্বস্ত চেয়ার আর কখনো দেখি না কারো
করতলগত হ’য়ে পোষ-মানা বাঘের মতন ব’সে আছে,
তেমনি নির্ভরযোগ্য টুল — কিম্বা বেঞ্চি নেই যেখানে আমার
পাঁচ ফুট ন ই’ইঞ্চি শরীর খুব সাবলীলভাবে দু’দণ্ড জিরোবে,
এমন আসন পাবে যার পাশে অন্তত থাকতে পারে
আমার সন্তান কিম্বা একরাশ তারা-পোরা সন্ধ্যার শহর
অথবা অত্যন্ত উঁচু মঞ্চ কোনো অনায়াসে এঁটে যায়—এমন চেয়ার—
যেখানে মাইক্রোফোনে সারাদিন তরুণ কবির কন্ঠ
যথার্থ অরুণোদয়ে ভ’রে দেবে আমাদের তামস হৃদয় ;
তেমন উল্লেখযোগ্য, জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের উপাদানে গ’ড়ে-ওঠা
হিরণ্ময় চেয়ার কোথাও কোনোদিন আমি পাবো নাকি!
একদা যেমন একবার পেয়েছিলাম অসীম লাবণ্যে-ভরা
সমুদ্র-সংলগ্ন এক সোনালি চেয়ার — ছিলো না হাতল,
একরোখা চুম্বনের মতো তবু তাকে আমি সরাতে পারি নি
ঠোঁটের কিনারা থেকে, নীলাভ শৈশবে সে আমার অদম্য জাহাজ।
আমাকে ফিরিয়ে দাও সেই সাবলীল সমুদ্রের বিহ্বল জাহাজ,
সেই জাহাজের রাত্রিময় ডেকে হীরে-জ্বলা একাকী চেয়ার
আমি আরো একবার বাতাসে উড়িয়ে চুল উপবিষ্ট হ’তে চাই।।