—————————————————♥
রোজকার মত আজও দাঁড়িয়ে ছিলেম, প্রতীক্ষায়……
না না, এক মুহূর্তও লেট করিনি,
সত্যি বলছি !
বেলা শেষের ক্লান্তি সত্বেও
অচেনা রাতের ভীতিকর দুঃস্বপ্ন ছাপিয়ে
বিগত দিনগুলোর সুখ-স্মৃতি
আর আগামি দিনের কল্পনা –
ওরা সবাই ঘিরে ছিলো আমাকে ।
আর ছিলো সেই বাইসাইকেলটি –
আমাদের পাপ-পূণ্যের স্বাক্ষী –
পাশের লাইটপোষ্টে ঠেস দিয়ে দাঁড়ানো
তোমাকে নিয়ে হারিয়ে যাবার জন্য !
অধীর অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকি
কবিতার কল্পনার পাতা থেকে
অবলীলায় আলতো করে হেঁটে আসবে
অবশ্যম্ভাবী তুমি
নিঃশব্দ চরনে – – –
শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে
যেভাবে ধীরে উদ্ভাসিত হয় আলো,
ঠিক তেমনি?
নাকি অনিবার্য পূর্ণ সূর্যগ্রহনের মত
অমাবস্যার অন্ধকারে ঢেকে দিয়ে
সমগ্র চরাচর?
কিনতু হঠাৎ
কী যে হলো,
ঐ ছ’ নম্বর বাসটা
ভুস্-ভুসে কালো ধোঁয়া ছুঁড়তে ছুঁড়তে
কোত্থেকে এসে দাঁড়ালো ঠিক রাস্তাটার মাঝখানেই,
তোমাকে এদিক ওদিক খুঁজছি –
আর তখুনি পাড়ার বিজনদা
যেন ভূঁই ফুঁড়ে উদয় হলো আমার পেছনে !
মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
‘কিরে বেনু, ইস্কুলে যাসনি আজ?’
আমি চোখের ইশারায় অনিমেষটাকে যতই বলছি
তুই দাদাকে একটু সামাল দে,
আর সেই ফাঁকে আমি রাস্তাটা পেরুতে পা বাড়াচ্ছি মাত্র,
ও মা, ও কি না নিজেই দিলো এক ভোঁ দৌড় !
অগত্যা দাদাকে ভিজে বিড়েল মার্কা একটু হেসে
‘এই তো যাচ্ছি’ বলেই দিলাম ছুট –
রাস্তার ওপারে এসে দেখি, কোথায় তুমি !
এক দৌড়ে এগিয়ে গেলাম অনেকটা –
তারপরও তুমি নেই,
ভুঁজবাজির মতো নিমেষেই মিলিয়ে গেলে, বাহ্ !
তখন সারাটা পথ জুড়ে
হাজারো মানুষের ভিড়ে কেউ নেই,
ক্লান্তিকর কোলাহলের মাঝে সুনসান নৈঃশব্দ,
দমকা বাতাসে ঝরাপাতার মত উড়ছে
আমার কবিতার পাতা,
যার পঙতিতে পঙতিতে
কী অপার সৌন্দর্যে গাঁথা
তোমার অপ্রকাশিত আখ্যান ।
———————————————–♥
-নিলয়
১৯ আগষ্ট ২০১৭, ঢাকা
web page: [email protected]
ছবি: সংগৃহীত